বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয়ে ও বিভিন্ন অফারের নামে এজেন্টদের ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) জেনে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো একটি চক্র।
সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের প্রতারকরা বিকাশের সাধারণ গ্রাহকদের কল করে প্রতারিত করতো। তবে এবার প্রতারণা হয়েছে এজেন্টদের সঙ্গে। আর এই এজেন্টদের নম্বরের তালিকা প্রতারকদের হাতে তুলে দিতেন বিকাশের টেরিটরি ম্যানেজার তানভীর সিরাজী ওরফে সিজার।
তানভীর গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই বিকাশ থেকে চাকরি হারিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের সখিপুর থানায় গত ৯ মার্চ রাসেল ও চিত্ত রঞ্জন নামে দুজন একটি মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তানভীর সিরাজীর সন্ধান পায়।
তাকে মঙ্গলবার দুপুরে টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেছে, সিরাজী প্রতারকদের হাতে তুলে দিতো এজেন্টদের নম্বরের তালিকা। আর এই তালিকা ধরে এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন প্রতারকরা।
বুধবার মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে এ বিষয়ক একটি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি জানান, মামলার বাদী রাসেল ও তার পাশের দোকানদার চিত্ত রঞ্জন, টাঙ্গাইল সখিপুরের তক্তারচালা বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী। তাদের বিকাশ এজেন্ট নম্বরে প্রতারকরা ফোন দিয়ে নিজেদের বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয়ে দিয়ে বিভিন্ন অফারের কথা বলে ওটিপি/ পিনকোড নাম্বার নিয়ে চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
মামলাটি সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম শাখা তদন্ত শুরু করে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিন জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে বিকাশের টেরিটরি ম্যানেজার তানভীর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগ টঙ্গী থেকে তানভীর সিরাজীকে গ্রেপ্তার করে।
সিআইডি জানায়, তানভীর সিরাজী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০১২ সালে টেরিটরি ম্যানেজার হিসেবে বিকাশে যোগ দেন। ঢাকা, নেত্রকোণা, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিকাশ প্রতারকদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিকাশ এজেন্টদের নম্বরযুক্ত শীট সরবরাহ করতেন।
বিকাশ প্রতারকরা তার কাছ থেকে পাওয়া এজেন্ট নম্বরগুলোতে ফোন দিয়ে বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করত।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘তানভীর একজন বিকাশ কর্মকর্তা হয়ে প্রতারকদের এই কাজে টাকার বিনিময়ে গোপন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করত বলে স্বীকার করেছেন। এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য প্রতারকদের গ্রেপ্তারে সিআইডির অভিযান অব্যাহত আছে।