বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পতন টানা চার দিনে, ৭৯ কর্মদিবসে সর্বনিম্ন লেনদেন

  •    
  • ৩ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:০৭

দিন শেষে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। গত ২৯ জুন এর চেয়ে কম লেনদেন হয়। সেদিন হাতবদল হয় ১ হাজার ১৪৮ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার। পতনের এই দিনে ৮৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৪৬টির। ৪০টির দাম ছিল অপরিবর্তিত।

বেশির ভাগ শেয়ারের দরপতনে পুঁজিবাজারে সূচক কমল আরও; সব মিলিয়ে টানা চার কর্মদিবস, যা সচরাচর দেখা যায় না।

গত সপ্তাহেই অবশ্য টানা সাত কর্মদিবস সূচকের পতন দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই এবার চার কর্মদিবস পতনের বিষয়টি প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়নি।

বুধবার দরপতনের পর প্রধান আলোচনা হচ্ছে লেনদেনে। একপর্যায়ে হাতবদল হওয়া শেয়ারের পরিমাণ এতটাই কমে যায় যে, লেনদেন ছয় মাস পর ১ হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে যায় কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে শেষ আধা ঘণ্টায় বেশ কিছু ক্রয়াদেশে তা হাজার কোটি টাকার ঘর পার হয়।

শেষ পর্যন্ত ৭৯ কর্মদিবসের মধ্যে সবচেয়ে কম লেনদেন দেখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। দিন শেষে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। গত ২৯ জুন এর চেয়ে কম লেনদেন হয়। সেদিন হাতবদল হয় ১ হাজার ১৪৮ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার।

পতনের এই দিনে ৮৯টি কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৪৬টির। ৪০টির দাম ছিল অপরিবর্তিত।

দিন শেষে সূচক পড়েছে ৫৬.০৭ পয়েন্ট। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের চার কর্মদিবসে সূচক পড়ল ১৬৪ পয়েন্ট। সূচক নেমে এসেছে ৬ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে।

টানা সাত কর্মদিবস পতনে গত ২৫ অক্টোবর সূচক ৬ হাজার ৮৮৫ পয়েন্টে নেমে আসার পর সেই দিকেই আবার ছুটছে পুঁজিবাজার।

দর সংশোধন শুরু হওয়ার পর বেলা ১২টা থেকে সূচক পতনের এমন দৃশ্য আবার দেখা গেল

সূচকের পতনে আগের দুই দিনের ধারাবাহিকতায় প্রধান ভূমিকায় ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি। একই দিনে ওয়ালটন, গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, রবি, ওরিয়ন ফার্মা, শাহজিবাজার পাওয়ার, জিপিএইচ ইস্পাত, বেক্সিমকো ফার্মা ও আইসিবির মতো বড় মূলধনি কোম্পানির দরপতন শেষ পর্যন্ত সূচকের বড় পতনের কারণ হয়।

এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচক পড়েছে মোট ৪২.৮৫ পয়েন্ট।

বিপরীতে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, রেনাটা, ইউনিলিভার, বেক্সিমকো, পূবালী ব্যাংক, বিডি ফাইন্যান্স, বিকন ফার্মা, বিএনআইসিএল, সিটি ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক মিলিয়ে ১০.০৮ পয়েন্ট সূচকে যোগ করেছে।

সূচকের পতনে প্রধান ভূমিকায় আবার ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো

স্বল্প মূলধনির উত্থান

বেশ কয়েকদিন পরে এই চিত্র দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৬টিরই শেয়ার সংখ্যা কম।

এর মধ্যে বিডি ল্যাপসের দর ৯.৯৫ শতাংশ, জেমিনি সি ফুডের দর ৮.৭৪ শতাংশ, ফার্মা এইডের দর ৭.৪৮ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের দর ৬.৯১ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্নের দর ৫.৮৩ শতাংশ, এমবি ফার্মার দর ৫.২৪ শতাংশ বেড়েছে।

সব মিলিয়ে যে ৮৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে, তার মধ্যে ৩৮টিই স্বল্প মূলধনি। সেগুলোর বেশিরভাগই লোকসানি। কয়েকটি লভ্যাংশ দিলেও একেবারেই ন্যুনতম। কয়েকটি মুনাফায় আছে।

গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনে এই কোম্পানিগুলোই সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছিল।

টপ টেনে বস্ত্রের আধিক্য

গত এক সপ্তাহ ধরে চলা চিত্রটি আবার দেখা গেল। লেনদেন দর বৃদ্ধিতে সেরা দশটি কোম্পানির মধ্যে বস্ত্র খাতের কোম্পানি ছিল চারটির। আর বাকি ছয়টি ছিল তালিকাভুক্ত অন্য পাঁচটি খাতের।

দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া বিডিল্যাম্প ছিল প্রকৌশল খাতের। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯৫ শতাংশ। শেয়ারধারীদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা কোম্পানির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ নভেম্বর।

এই ১০টি কোম্পানি সূচকে কিছু পয়েন্ট যোগ করেছে

শেয়ারে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা জেমিনি সি ফুডের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭৪ শতাংশ। অন্য খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন খাতের ফার্মা এইড, আ্যাম্বিফার্মা, বিবিধ খাতের ন্যাশনাল ফিড মিলস, বিমা খাতের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স।

বস্ত্র খাতের কাট্টালি টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.৪৮ শতাংশ। শেয়ার প্রতি ২.৫০ পয়সা যোগ হওয়া কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে।

ঢাকা ডাইংয়ের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.২২ শতাংশ। শেয়ার দরে যোগ হয়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা; দাম ২৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ টাকা ২০ পয়সা।

দেশ গার্মেন্টসের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৯১ শতাংশ। অনালিমা ইয়ার্নের দর বেড়েছে ৫.৮৩ শতাংশ।

তবে বস্ত্র খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমেছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৪১টির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৪টির।

আগ্রহের শীর্ষে আবার বেক্সিমকো

মঙ্গলবার বিবিধ খাতের মোট লেনদেন হয়েছিল ১৪২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। বুধবার তা বেড়ে হয়েছে ১৬৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এই বৃদ্ধির পেছনে প্রধান অবদান বেক্সিমকো লিমিটেড।

গত সোয়া এক বছরে ১৩ টাকা থেকে ১৬০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরও প্রায় প্রতিদিনই এই কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। বুধবার লেনদেন হয়েছে ১৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

কোম্পানিটির শেয়ারদর সামান্য বেড়েছে। আগের দিন দাম ছিল ১৬২ টাকা ৬০ পয়সা, দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১৬৩ টাকা ২০ পয়সা।

এই খাতে শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে লোকসানি লভ্যাংশ না দেয়া সাভার রিফ্যাক্টরিজের। আগের দিনের দরের চেয়ে বেড়েছে ৩.৮৬ শতাংশ। জিকিউ বলপেনের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.৬৮ শতাংশ।

বুধবার কেবল চারটি খাতে একশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন দেখা গেছে

সিমেন্ট খাতে আগ্রহ হঠাৎ বাড়ার পর পতনও হয়েছে দ্রুত। এক দিনে প্রায় তিনশ কোটি টাকার লেনদেনের রেকর্ডও ছিল অক্টোবরে। সেখান থেকে মঙ্গলবার তা কমে হয় ২৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। সেটি সামান্য বেড়ে হয়েছে ৩৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

বরাবরের মতোই এই খাতে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের লেনদেনই হয়েছে বেশি। ৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে একটি কোম্পানিরই।

কোম্পানিটির শেয়ারদর ১১০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর আগের দিন নেমে এসেছিল ৭৬ টাকায়। সেখান থেকে ৩ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৭৯ টাকা ৬০ পয়সা।

এ খাতের সবচেয়ে বেশি দর হারানো কোম্পানি ছিল চার বছর পর মুনাফায় ফেরার পরও লভ্যাংশ না দেয়া আরামিট সিমেন্ট। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ২ টাকা ১০ পয়সা বা ৪.৩৭ শতাংশ কমেছে।

নিভু আলোয় ব্যাংক, বিমা

এক সময়ের দাপটে বিমার শেয়ারের দর এখন প্রায় তলানিতে। প্রতিনিয়ত দর কমে কমে সমন্বয় করে বের হওয়ার পথই দেখতে হচ্ছে এ খাতের বিনিয়োগকারীদের।

প্রায় প্রতিদিন কমছে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে কমেছে ব্যাংক খাতের শেয়ার দরও।

বুধবার লেনদেনে বিমা খাতের মাত্র ১১টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৩৫টির। দর আগের দিনের মতোই আছে পাঁচটির।

বেশিরভাগ খাতেই লেনদেন কমেছে বুধবার

ব্যাংক খাতের ১৮টি কোম্পানির শেয়ার দর হারিয়েছে। দর বেড়েছে ৬টির। সবচেয়ে বেশি ৩০ পয়সা বেড়েছে সিটি ব্যাংকের। এদিন ব্যাংকটির ১.০৮ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

দর হারানো ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষে ছিল এবি ব্যাংক, যার শেয়ার দর কমেছে ২.১০ শতাংশ। এছাড়া ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.৬৩ শতাংশ।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ দশমিক ০৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৭ দশমিক ০১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৬১ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২০ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টে।

লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর