আদালতের আদেশ পালন না করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক উপাচার্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে অবমাননার রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের করা আদালত অবমাননার আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে।
রুলে আদালতের আদেশ পালন না করায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আছরারুল হক। তার সঙ্গে ছিলেন আমিনুর রহমান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী আছরারুল হক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার ও সাবেক রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে করা আবেদন থেকে জানা যায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষককে ২০০৬ সালের মে মাসে পদোন্নতি দেয় ঢাবি কর্তৃপক্ষ। এ সময় পদোন্নতি না পেয়ে ওই বিভাগের এক শিক্ষক আয়েষা মাহমুদা হাইকোর্টে রিট করেন।
২০০৯ সালের ১১ আগস্ট হাইকোর্ট তাকে ২০০৬ সালের মে মাস থেকে পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়রিটিসহ সব সুযোগ-সুবিধা দিতে নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি ওই তিন শিক্ষকের পদোন্নতির আদেশ বাতিল করা হয়। এর বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপিল করে।
আপিল শুনানিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়েষা মাহমুদকে সিনিয়রিটিসহ ২০০৬ সাল থেকে ভূতাপেক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাকি তিন শিক্ষকের পদোন্নতি বহাল থাকলেও আয়েষা মাহমুদার কোনো ক্ষতি হবে না।
পরে আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ৮ এপ্রিল হাইকোর্টের আদেশ মোডিফাই করে রায় দেয়। হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে তিন শিক্ষকের পদোন্নতি বহাল করে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আয়েষা মাহমুদা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে।
আদেশের পর বুধবার আইনজীবী আছরারুল হক বলেন, ‘আদালতের আদেশের পরেও ঢাবি কর্তৃপক্ষ টেকনিক্যালি আয়েষা মাহমুদকে সিনিয়রটি হিসেবে দুই নম্বরে রাখলেন। কিন্তু সিনিয়রিটি হিসেবে এক নম্বরে দেয়ার কথা ছিল।
‘এর মধ্যে সিনিয়রিটি হিসেবে এক নম্বরে থাকা ওই তিন শিক্ষকের একজন চেয়ারম্যান হয়েছেন। তাই তিনি আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন। আদালত আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন।’