শরীয়তপুর সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইলে তাদের অবরুদ্ধ করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম তফাদারের বিরুদ্ধে।
উপজেলার ডোমসার ইউপিতে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনি জনসভায় জেলা আওয়ামী লীগের এ সহসভাপতির দেয়া এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভাইরাল হওয়া ৬ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ভিডিওর পুরোটাজুড়েই তাকে বিদ্রোহী প্রার্থী ও সমর্থকদের হুমকি দিতে দেখা গেছে।
সেখানে তিনি বলেন, ‘নৌকার বিদ্রোহী মজিবুরের পক্ষে যে ভোট চাবে তাদের তালিকা করে আমাকে দেবেন। যখনই সিদ্ধান্ত দেব, তখনই রাস্তাঘাটে এদের অবরুদ্ধ করা হবে। ভোট চাইতে দেয়া হবে না। আমার কথা পরিষ্কার।’
জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে জানা যায়, আগামী ১১ নভেম্বর শরীয়তপুর সদর উপজেলার ১০ ইউপিতে ভোট হবে। এর মধ্যে সদরের ডোমসার ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মিজান মোহাম্মদ খান। তবে তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো কমিটির সদস্য নন।
মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মজিবুর রহমান।
সোমবার রাতে ডোমসারের ভর্তাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নৌকার প্রার্থী মিজান মোহাম্মদ খানের নির্বাচনি জনসভা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেয়ার সময় ওই হুমকি দেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল হাশেম তফাদার।
তবে ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে আবুল হাশেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীকে যারা সমর্থন করে, যারা ভোট চায়, নৌকার বিপক্ষে ভোট চায়, তাদেরকে তালিকা করে আগামীতে বহিষ্কার করা হবে। এটাই ছিল কথা। এ জন্য বলেছি, যারা নৌকার বিরোধিতা করে তাদের তালিকা করবেন, কিন্তু তারা এডিট করে এটা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন সচেতন ব্যক্তি, উপজেলা চেয়ারম্যান দুইবারের, জেলা আওয়ামী লীগের ভাইস চেয়ারম্যান, আমি সরাসরি এটা বলতে যাব কেন?’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি ভয় পাইতেছি, তারা আমারে ও আমার লোকজনরে ভোট চাইতে দিব না। আর ভোট কাইটা নিয়া যাইব। সরাসরি তারা বলতেছে। আমি প্রশাসনিক সাহায্য চাই, মিডিয়ার সাহায্য চাই, আমাকে দয়া করে সাহায্য করেন। আর আমি প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত অবশ্যই করব।’
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ডোমসার ইউপির রিটার্নিং কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘লিখিত দিলে হয়তো আমরা সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাঠাব। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ আছে, সবকিছুই তো নিয়োগ আছে।’
লিখিত অভিযোগ না দিলেও ভিডিও দেখে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘এই জিনিস আসুক, তারপর আমি ওই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।’