সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক তার জনপ্রিয় ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম (চেহারা শনাক্ত করার ব্যবস্থা) বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। ছবি ও ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করার এ প্রযুক্তি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধ করা হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে ফেসবুক।
এর ফলে আগামীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি বা ভিডিওতে ট্যাগিং অপশন আর আসবে না, এটি করা যাবে ম্যানুয়ালি।
নতুন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ১০০ কোটির বেশি মানুষের ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন টেমপ্লেট’ মুছে ফেলার ঘোষণাও দিয়েছে ফেসবুক।
জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা নিয়ে ওঠা গুরুতর উদ্বেগের মধ্যেই এ ঘোষণা দেয়া হলো। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদন ও ফেসবুকের ব্লগে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে ফেসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরমি পেসেন্টি একটি ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, ‘ব্যবস্থাপকরা এখনও এটি পরিচালনায় একটি সুস্পষ্ট নিয়ম দেয়ার চেষ্টা করছেন। চলমান এই অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা বিশ্বাস করি, এটির ব্যবহার নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আনাই উপযুক্ত।’
বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মটি গত কয়েক বছর ধরেই প্রযুক্তি ব্যবহারের নৈতিকতার নিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে রয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, সাধারণ বিক্রেতা, হাসপাতাল এবং বিভিন্ন ব্যবসায় যুক্ত মানুষদের কাছে জনপ্রিয় এই প্রযুক্তি গোপনীয়তা লঙ্ঘন, প্রান্তিক গোষ্ঠীকে টার্গেট করা এবং নজরদারিতে ব্যবহার হতে পারে।
ফেসবুক তাদের ব্লগে দেয়া পোস্টে জানিয়েছে, ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মগুলোর অপব্যবহারের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রক ও আইন প্রণেতাদের গভীর তদন্তের মধ্যে রয়েছে।
ফেসিয়াল রিকগনিশন বন্ধের বিষয়ে টেক জায়ান্টটি জানিয়েছে, দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। এটি বন্ধ করতে তারা এখন ধাপে ধাপে ১০০ কোটির বেশি ব্যবহারকারীর ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন টেমপ্লেট’ মুছে ফেলবে।
ফেসবুকের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, অপসারণের কাজটি বিশ্বব্যাপী চালু হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে এটি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফেসিয়াল রিকগনিশন বন্ধ হলে ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় অল্টারনেটিভ টেক্সট টুলের (এটিটি) ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলবে। এটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ছবির একটি বর্ণনা তৈরি করে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে এখন আর ছবিতে কারা আছে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানাবে না ফেসবুক। তবে এটিটির অন্যান্য ব্যবহার স্বাভাবিক থাকবে।
টেক জায়ান্টটি জানিয়েছে, প্রযুক্তিটি এখন কিছু নির্দিষ্ট সেবার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। লক হয়ে যাওয়া অ্যাকাউন্টগুলো চালু, ব্যক্তিগত ডিভাইস আনলক করার মতো কাজে এটি ব্যবহার হবে।