গাইবান্ধায় বাদীর সঙ্গে ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় গ্রামবাসীর হাতে আটকের পর লাঞ্ছিত ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ আসামির জামিন দিয়েছে আদালত।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-১-এর (সুন্দরগঞ্জ) বিচারক উপেন্দ্র চন্দ্র দাস মঙ্গলবার বিকেলে তাদের জামিন দেন।
যাদের জামিন হয়েছে তারা হলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের আবদুল খালেক, আমজাদ আলী, সুমন মিয়া, বকুল মিয়া, মুকুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আবদুর রাজ্জাক, হামিদুল ইসলাস, রবিউল ইসলাম, নাজমুল হক ও রাজু মিয়া। আরেকজনের নাম জানা যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী নিরাঞ্জন কুমার ঘোষ।
নিউজবাংলাকে তিনি জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ছড়ারপাতা গ্রামের এক দুবাই প্রবাসীর বাড়িতে যান কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই তোফাজ্জল। কিছু সময় পর ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে গোয়ালঘরে ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় তোফাজ্জলকে হাতেনাতে আটক করেন গ্রামবাসী।
পরদিন শনিবার লাঞ্ছিত ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করে। এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইনজীবী নিরাঞ্জন বলেন, 'একজন পুলিশ সদস্যের মুভমেন্ট পাস, সরকারি ইউনিফর্ম ও সঙ্গীয় এক বা একাধিক ফোর্স ছাড়াই অভিযান বা তদন্তে যাওয়ার কোনো বিধিবিধান নেই, যেটি এএসআই করেছেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি ব্যক্তিগত কাজে ওই প্রবাসীর বাড়িতে গিয়েছিলেন।’
এসব বিষয় আদালত বিবেচনায় নিয়ে শুনানি শেষে বিচারক জামিন দেন বলেও জানান এই আইনজীবী।
যে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে এএসআই তোফাজ্জলকে 'অন্তরঙ্গ' অবস্থায় আটকের অভিযোগ উঠেছে, সেই নারী গত ৩১ অক্টোবর একটি মামলা করেন। মামলায় গ্রামের সাতজন লোকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে গ্রামবাসী ওই এএসআইকে আটক করেন। পরে লোকজন বাড়িতে ঢুকে মালামাল চুরিসহ তার শ্লীলতাহানি ঘটান।
গ্রামবাসী বলছেন, কিছুদিন আগে ওই নারীর ভাশুরের সঙ্গে তার স্বামীর জমি নিয়ে বিরোধ হয়। স্বামী প্রবাসে থাকায় এই ঘটনায় ভাশুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এএসআই তোফাজ্জল। তদন্তের খাতিরে ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল তার। সেই থেকে তাদের সখ্য গড়ে ওঠে।
এ ঘটনার পরদিন ৩০ অক্টোবর অভিযুক্ত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তোফাজ্জল হোসেনকে প্রত্যাহার করে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করে বাহিনীটি।