বরগুনা জেলা যুবলীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ২৪০ জন জীবন-বৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিয়েছেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ যুব নেতা কমিটির শীর্ষ দুটি পদের জন্য জীবন-বৃত্তান্ত জমা দেন।
দুই পদের জন্য বিপুলসংখ্যক প্রার্থীর আগ্রহ প্রকাশ নিয়ে জেলাজুড়ে আলোচনা চলছে। এর আগে ২০১৫ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ আসনে ৫৩ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনে বরগুনাকে দেশজুড়ে আলোচিত করেছিলেন।
বরগুনা শহরের বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে ১১ সেপ্টেম্বর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা হয়। ওই সভায় বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জানান, এ বছর ১ ডিসেম্বর বরগুনা যুবলীগের সম্মেলন হবে।
ওই সভায় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলমসহ কেন্দ্রের বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। তখন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়।
২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদের সই করা এক চিঠিতে ২৬ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এক সপ্তাহের মধ্যে জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু জানান, ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত শেষ সময় পর্যন্ত ২৪০ জন জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
মাজহারুল ইসলাম জানান, জীবন-বৃত্তান্তে পদ-পদবি উল্লেখ করার সুযোগ নেই। সম্মেলনের মাধ্যমে গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আগ্রহীদের মধ্য থেকে নেতা নির্বাচিত হবেন।
জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘আমি অনেক বছর ধরে বরগুনা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছি। নতুন কমিটিতে আমি সভাপতি পদপ্রত্যাশী।’
জেলা যুবলীগের শীর্ষ দুই পদের জন্য এরই মধ্যে অনেকেই তদবির শুরু করেছেন। জেলা যুবলীগের দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, জীবন-বৃত্তান্ত জমা দেয়া অধিকাংশই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এ ছাড়া যুবলীগের বর্তমান কমিটির বিভিন্ন পদে রয়েছেন এমন একাধিক নেতাও রয়েছেন।
এর মধ্যে আছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সম্পাদক জুনায়েদ জুয়েল, বরগুনা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল বারি রনি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসেন রাসেল, সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান রকিব, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি যুবায়ের আদনান, সহসভাপতি আনিসুজ্জমান তুহিন, যুগ্ম সম্পাদক মাহমুদ মিরাজ।
এ ছাড়া জেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি কামরুল আহসান মহারাজ, সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, সহসভাপতি ইমাম হোসেন রোকন ও রেজাউল করিম অ্যাটম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন শিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ মোল্লা ও কামাল হোসেন জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুনায়েদ জুয়েল বলেন, ‘আমি সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছি। অতীতে ছাত্রলীগে নিষ্ঠা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। সৎ, শিক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের দিয়ে বরগুনায় মানবিক যুবলীগ গঠন করা হলে আমি সেই কমিটির দায়িত্ব নিতে চাই।’
দলীয় সূত্র জানায়, অনেক বছর কমিটি না হওয়ায় জেলায় নেতৃত্বজট তৈরি হয়েছে। এ কারণে ২৪০টি সিভি জমা পড়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আকতারুজ্জামান রকিব বলেন, ‘দক্ষতার সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। যুবলীগের নেতৃত্বের দায়িত্ব পেলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করব।’
২০০৬ সালে বরগুনা জেলা যুবলীগের সম্মেলনে কামরুল আহসান মহারাজ সভাপতি ও সাহাবুদ্দিন সাবু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৫ বছর ধরে ৭১ সদস্যের কমিটি জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘যুবলীগ একটি আদর্শিক সংগঠন। এই সংগঠনে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাও বেশি। গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করা হবে। যোগ্য নেতৃত্বের হাতে বরগুনা জেলা যুবলীগের দায়িত্ব দেয়া হবে।’