কক্সবাজারের একটি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে কবর দিতে দেয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তার এই বক্তব্যের ভিডিও এরই মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
নির্বাচন কর্মকর্তাও এই ভিডিওটি দেখেছেন। তিনি বলেছেন, বিষয়য়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন তারা। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে দলটির নেতা শাহ আলমকে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়া যুবলীগের নেতা ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
দুই নেতাই আগামী ১১ নভেম্বরের ভোটকে ঘিরে প্রচারে ব্যস্ত।
সোমবার রাতে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মনির মার্কেট এলাকায় নিজের প্রচার অফিসের উদ্বোধন করেন নৌকার প্রার্থী শাহ আলম। সেখানেই তিনি নৌকায় ভোট না দেয়ার পরিণতি সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায় শাহ আলম বলছেন, ‘কী অইবা? চিহ্নিত অইবা। হবরস্থান চৌধুরীপাড়া অইব দে। আইত ন পারিবা। আর হবরস্থানত আই হবর দিত ন দিয়্যুম। হবরস্থান আঁর, আঁই দিত ন দিয়্যুম এডে।'
অর্থাৎ ‘(ভোট না দিলে) কী হবে? চিহ্নিত হবে। কবরস্থান চৌধুরীপাড়ায় হবে। এখানে আসতে পারবে না। আর এখানকার কবরস্থানে কবর দিতে দেব না। কবরস্থান আমার। এখানে আমি কাউকে কবর দিতে দেব না।'
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বাড়ি চৌধুরীপাড়ায়। শাহ আলমের বাড়ি কুলালপাড়া এলাকায়। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বুঝিয়েছেন, তার এলাকার যে ভোটার তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভোট দেবে, তাদের কবর চৌধুরীপাড়ায় দিতে হবে। শাহ আলম তার নিজের এলাকায় হতে দেবেন না।
শাহ আলম আরও বলেন, 'সোজা হতা, বাংলা হতা। চৌধুরীপাড়াত জনগুই পড়িব লাশ-ইবা। মসজিদত আই না পারিবা। আর বেগ্গুন ঐক্যবদ্ধ। এই পাঁচজন, আটজন, দশ ন, বেগ্গিন বন্ধ অই যাইব। চিহ্নিত গইজ্যুম, সমস্ত কিছু বন্ধ অই যাইব।’
অর্থাৎ 'সোজা কথা, বাংলা কথা। চৌধুরীপাড়ায় এই লাশটাকে চলে যেতে হবে। মসজিদেও আসতে পারবে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। এই পাঁচ, আট, দশজনের সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হবে। সবাইকে চিহ্নিত করে রাখা হবে। সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উখিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও কোটবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবু ছিদ্দিক।
এমন বক্তব্যের বিষয়ে শাহ আলমের কাছ থেকে ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি শাহ আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী ইমরুল কায়েস চৌধুরীও। যোগাযোগ করে হলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমি কিছুই বলব না।'
উখিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইরফান উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’