সিলেট নগরের তিনটি রেস্টুরেন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন রেস্টুরেন্ট মালিক ও শ্রমিকরা। তারা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে বন্ধ থাকবে সিলেটের সব রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে হাউস।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট ক্যাটারার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শান্ত দেব।
এ ছাড়া অভিযানের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জিন্দাবাজারে সড়ক অবরোধ করেন রেস্টুরেন্ট মালিক-শ্রমিকরা। বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় জিন্দাবাজার সড়কের চারপাশে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়।পরে প্রশাসনের আশ্বাসে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে যান মালিক-শ্রমিকরা। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।মঙ্গলবার দুপুরে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জিন্দাবাজার এলাকার ভোজনবাড়ি রেস্টুরেন্টকে সিলগালা এবং পাঁচভাই ও পানসী রেস্টুরেন্টকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পচাবাসি খাবার পরিবেশনের দায়ে তাদের এ সাজা দেয়া হয়।ক্যাটারার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শান্ত দেব বলেন, ‘লকডাউনের পরে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এর মধ্যে রয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্সের বোঝা। রেস্টুরেন্ট ব্যবসা যখন ধুঁকছে, তখন অভিযানের নামে রেস্টুরেন্ট মালিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো রেস্টুরেন্টে সমস্যা থাকলে জরিমানা হতে পারে। তবে সিলগালা করার বিধান নেই। এ ঘটনায় বোঝা যায়, রেস্টুরেন্ট মালিকদের হয়রানি করতে এ রকম অভিযান করা হচ্ছে।’শান্ত দেব বলেন, ‘অভিযান বন্ধ, সিলগালা করা রেস্টুরেন্ট খুলে দেয়া ও আটক কর্মচারীদের মুক্তির দাবিতে বুধবার থেকে সিলেটের সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। এ ছাড়া বুধবার সকালে রেস্টুরেন্ট মালিক ও কর্মচারীরা শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাবেন।’
তিনি জানান, রেস্টুরেন্ট ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে এর সঙ্গে জড়িত সিলেটের কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়বেন।এর আগে বিকেলে সিলেট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির হলরুমে এক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের সভাপতি এ টি এম শোয়েব এবং সিলেট রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি ও সিলেট ক্যাটারার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওই সভায়ও বুধবার থেকে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।বৈঠকের পরই বিকেল ৫টার দিকে নগরীর জিন্দাবাজার পয়েন্টে রেস্টুরেন্ট মালিক-কর্মচারীরা মিলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
মঙ্গলবার ভোজনবাড়িতে অভিযান শেষে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘এখানে অভিযানে এসে আমরা খাদ্যের মানে ব্যাপক অনিয়ম পেয়েছি। এ ছাড়া ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন নেই, খাবার পরিবেশনের বৈধ কাগজপত্র নেই। সবকিছু মিলিয়ে আমরা সাময়িক সময়ের জন্য রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে তাদের সময় দিয়েছি। আপাতত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেস্টুরেন্টের দুজনকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি।’অন্য দুই রেস্টুরেন্টে অভিযানের পর তিনি বলেন, ‘এসব রেস্টুরেন্টে এর আগে একাধিকবার অভিযান চালালেও কোনো কাজ হয়নি। অভিযানের সময় রেস্টুরেন্টগুলোতে এমন অনেক খাদ্য পেয়েছি, যেগুলো দুই থেকে তিন দিন আগের।’