বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয়া বিএনপি এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের নেতাদের কার্যত অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা কোনো মনোনয়ন দেবেন না। তবে কেউ নির্বাচন করতে চাইলে বাধাও দেবেন না।
বিএনপির এ অবস্থান ভোট নিয়ে দলের সাম্প্রতিক ঘোষণার বিপরীত। মির্জা ফখরুল একাধিকবার জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে তারা কোনো ভোটে অংশ নেবেন না।
তবে এ ঘোষণার মধ্যেই চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কয়েক শ এলাকায় বিএনপির নেতারা চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রার্থী দেয়নি বলে এই চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মার্কা ধানের শীষ নয়। একেকজন একেক এলাকায় নিজেদের পছন্দমতো মার্কা বাছাই করে ভোটের লড়াইয়ে আছেন। আর তাদের পাশে দলের নেতা-কর্মীরাও আছেন।
মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, দলীয়ভাবে নির্বাচন করব না। তবে দলের কোনো ব্যক্তি যদি নির্বাচন করতে চায়, সেখানে আমাদের কোনো বাধা থাকবে না।’
ফখরুল মনে করেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়া উচিত নয়। সরকার যখন দলীয় প্রতীকে ভোটের ব্যবস্থা করে, তখনই তাদের বিরোধিতার বিষয়টিও তুলে ধরেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই আমরা দলগতভাবে নির্বাচন করার বিপক্ষে ছিলাম। আমরা সব সময় বলেছি যে, স্থানীয় সরকারে দলীয় মনোনয়ন দেয়াটা সঠিক হবে না; যেটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হতে শুরু করেছে।
‘তারা (সরকার) এখন দলীয় মনোনয়ন বাদ দিয়ে বা প্রতীক বাদ দিয়ে নির্বাচন করার চিন্তা করছে। আমাদের মূল বক্তব্যটা ছিল যে দলীয় প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গেলে গ্রামের সমাজ পুরোপুরিভাবে বিভক্ত হয়ে যাবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। দাবি তোলেন নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর।
নতুন নির্বাচন কমিশন যেন ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারই গঠন করে, সেই দাবিও জানালেন ফখরুল।
সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় সার্চ কমিটি করা হয়েছে। সেখানে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। কিন্তু এ সরকার কোনো কিছু গ্রহণ করে না। তারা তাদের মতো করে নির্বাচন করার জন্য সবকিছু সাজিয়ে নেয়।’
ঠাকুরগাঁও বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।