থাইল্যান্ডের রেনং সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা গেলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর সঙ্গে মঙ্গলবার ঢাকা চেম্বার প্রতিনিধিদলের মতবিনিময়ে বিষয়টিতে গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
এ সময় রাষ্ট্রদূতকে উদ্দেশ্য করে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘দুই বন্দরের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এটি করতে রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।’
জবাবে থাই রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমো জানান, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে দুপক্ষকেই আরও উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি আশা করেন, ভারত-থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণ শেষ হলে এ অঞ্চলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়বে।
রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী বছর বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ডের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশস্থ থাই দূতাবাস ‘রোড শো’ এবং বাণিজ্য মেলার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে।
থাইল্যান্ডে করেনোভাইরাস মহামারি সংক্রমণের হার এখন নিম্নমুখী এবং কয়েক মাসের মধ্যেই থাই সরকার পর্যায়ক্রমে সেখানকার সব কার্যক্রম জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবে বলে জানান। এতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও উন্নত হবে বলে মনে করেন তিনি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৩৭ দশমিক ০৬ মিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে আমদানি করা হয় ৮০১ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। বিপরীতে দেশটিতে রপ্তানি করা হয়েছে মাত্র ৩৫ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য।
২০২১ সালে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ মিলিয়ন ডলারে।
এ সময় থাই উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ বিবেচনায় থাইল্যান্ড ১৫তম অবস্থানের রয়েছে, তবে অবকাঠামো, অটোমোটিভ ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পর্যটন এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে থাই উদ্যোক্তাদের আরও বেশি বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া থাইল্যান্ডের শ্রমঘন শিল্পগুলো বাংলাদেশে স্থানান্তরেরও বিরাট সুযোগ আছে বলে জানান তিনি।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের পিটিএ এবং এফটিএ স্বাক্ষর করলেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।
তবে দুই পক্ষকে এ বিষয়ে সমান মনোযোগী হওয়া উচিত বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
ডিসিসিআই সহসভাপতি মনোয়ার হোসেনসহ থাই দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।