বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়া বিতর্কিত প্রার্থী পাল্টায়নি আ.লীগ

  •    
  • ২ নভেম্বর, ২০২১ ১৫:০৮

জাহাঙ্গীর কবির নানক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুটি বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। এক, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের আমরা ছেঁটে ফেলে দিচ্ছি। দ্বিতীয়ত, একাত্তরে বাংলাদেশবিরোধী পরিবারগুলো বাছাইয়ের চেষ্টা করছি। তারপরও বিতর্কিত দুই-একজন দলে ঢুকে পড়ে।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বিএনপি থেকে আসা নেতা, কোথাও কোথাও সাবেক শিবির নেতাকে। এক-দুটি নয়, বেশকিছু ইউনিয়ন পরিষদেই মনোনয়নের ক্ষেত্রে এমন অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।

আগামী সংসদ নির্বাচনের বাকি আছে দুই বছরের মতো। এই সময়ে এসে স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে এসব ঘটনা দলের ঐক্য নষ্ট করে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ নিয়ে দলের মধ্যেও আছে অস্বস্তি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে মনোনয়নের তালিকা যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে তৃণমূল থেকে ত্যাগীদের নাম চাওয়া হচ্ছে।

দলের পক্ষ থেকে আরও বলা হচ্ছে, মনোনয়ন নিয়ে আপত্তি থাকলে আপিল করার সুযোগ আছে। তবে কার কার বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে, কতগুলো আপিল জমা পড়েছে, সে বিষয়ে তথ্য দিতে নারাজ দল।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের দক্ষিণ রণিখাই ইউপির চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমাদ। তিনি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবিরের উপজেলা শাখার নেতা ছিলেন। অভিযোগের পরও তিনি নৌকার প্রার্থী রয়ে গেছেন।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ৯ নম্বর পোড়াদহ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শারমিন আক্তার নাসরিন। তিনি স্বাধীনতাবিরোধী শান্তি কমিটির এক নেতার মেয়ে- এমন অভিযোগের পরও তিনি নৌকার প্রার্থী হিসেবে রয়ে গেছেন। তিনি মিরপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

পটুয়াখালীর একটি ইউনিয়নে বিএনপি থেকে আসা আনোয়ার হোসেন খানকে নৌকার মনোনয়ন দেয়ার পর ৫৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ করা এক নেতার কান্নার ছবি ভাইরাল হয়। আওয়ামী লীগের ত্যাগী ওই নেতার নাম আজিজ হাওলাদার। তারপরও এখানে প্রার্থী বদল হয়নি।

ব্যতিক্রম কেবল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি ইউপি। নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে প্রার্থী বদল করেছে আওয়ামী লীগ।

নাসিরনগর সদর ইউনিয়নে আবুল হাসেমের পরিবর্তে সাবেক ইউপি সদস্য পুতুল রানী বিশ্বাস এবং হরিপুর ইউনিয়নে দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির পরিবর্তে ওয়াসিম আহমেদকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম। মনোনয়ন পেয়ে বলেন, তিনি বিএনপি করলেও বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ছিলেন

নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া জহুরুল ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এসব বিষয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দুটি বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। একটি হলো, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের আমরা ছেঁটে ফেলে দিচ্ছি। তাদের আর দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে না। আরেকটি বিষয় হলো, একাত্তরে যেসব পরিবার বাংলাদেশবিরোধী ছিল, তাদের বাছাই করার চেষ্টা করছি। তারপরও বিতর্কিত দুই-একজন দলে ঢুকে পড়ে। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে।’

বিতর্কিতরা কীভাবে মনোনয়ন পেল, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে গিয়ে এমন দুই-একটি ঘটনা ঘটছে। আর সে ভুলগুলো জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা শুধরে নিচ্ছি।’

মনোনয়ন না পেলেই দলের প্রতীক পাওয়া নেতাকে ‘রাজাকার’ বা ‘রাজাকারপুত্র’ বানানো হচ্ছে বলে খেদ ঝেড়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সম্প্রতি এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ দুর্বিষহ অবস্থায়। মনোনয়ন না পেলেই একে অপরকে রাজাকার বা রাজকারপুত্র বানাতে ব্যস্ত সবাই। তারপরও কিছু সত্য ঘটনা রয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এর আগে ২৫ অক্টোবর জানিয়েছিলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে বিতর্কিতদের বাদ দিতে তৃণমূল থেকে তাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আপিল করার সুযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমা দেয়া হচ্ছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কিছু স্থানে ইতোমধ্যে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে।

বিতর্কিতদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো কোনো জায়গায় পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে যারা দলে ভুল তথ্য পাঠিয়েছে তাদের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘দলের কোনো জায়গা থেকে যদি ভুল ব্যাখ্যা এসে থাকে তাদের বিষয়ে তো আমরা অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্তদের মধ্যে কতজনের বিরুদ্ধে আপিল জমা পড়েছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান বলেন, ‘এ বিষয়ে তথ্য দেয়া যাবে না। বিষয়টি কনফিডেনশিয়াল।’

মোট কতটি স্থানে প্রার্থী বদল করা হয়েছে সে বিষয়েও কোনো তথ্য দেননি তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর