বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিভাজন নিয়েই চলছে ছাত্র ইউনিয়ন

  •    
  • ২ নভেম্বর, ২০২১ ১৩:৫৫

বিভাজনের জন্য ‘বাইরের লোকজনের’ ইন্ধনকে দায়ী করছেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতৃত্বে থাকা ফয়েজ উল্লাহ। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে অন্য পক্ষ বলছে, ফয়েজদের সদিচ্ছার অভাবেই কার্যকর হয়নি ঐক্য প্রক্রিয়া।

কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মতবিরোধের পর বিভাজন নিয়েই চলছে দেশের প্রাচীনতম বামপন্থি ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কার্যক্রম। বিভিন্ন সময় এই বিভাজন দূর করার উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যত তা সফল হয়নি।

বিভাজনের জন্য ‘বাইরের লোকজনের’ ইন্ধনকে দায়ী করছেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতৃত্বে থাকা ফয়েজ উল্লাহ। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে অন্য পক্ষ বলছে, ফয়েজদের সদিচ্ছার অভাবেই কার্যকর হয়নি ঐক্য প্রক্রিয়া।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর ৪০তম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন ফয়েজ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল। তবে সংগঠনের এক অংশের অভিযোগ, ওই সম্মেলনে একাধিক গঠনতান্ত্রিক ব্যত্যয় ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চা বিনষ্ট করা হয়েছে। তাই রিকুইজিশন জাতীয় কাউন্সিলের দাবি তোলে এই অংশটি।

এরপর ফয়েজ-দীপক কমিটি থেকে রিকুইজিশন কাউন্সিল দেয়ার দাবি নাকচের পর ১২ এপ্রিল জরুরি সম্মেলন করে বিক্ষুব্ধ অংশ। সেই কমিটিতেও ফয়েজকে সভাপতি ও দীপককে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। তবে সহসভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদকসহ বেশ কয়েকটি পদে রদবদল করা হয়।

সবশেষ গত ১৮ জুন জাতীয় পরিষদের সভায় নতুন কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় ফয়েজ ও দীপককে। এখন এই অংশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সাধারণ দায়িত্ব পালন করছেন নজির আমীন চৌধুরী জয় ও রাগীব নাঈম। অন্য অংশের নেতৃত্বে আছেন ফয়েজ ও দীপক। আলাদাভাবে দুই পক্ষই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম।

এই বিভাজন নিয়ে জানতে চাইলে ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘৪০তম সম্মেলনে হয়তো কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ঘটেছে। পরবর্তীতে আমাদের কিছু সহযোদ্ধা এই অভিযোগ করে একটি সমাধান অথবা জরুরি কাউন্সিলের দাবি তোলেন। গঠনতান্ত্রিকভাবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে সেটা দিতে পারিনি। আমরা তাদের সঙ্গে বারবার বসেছি, তারপরেও তারা কয়েক মাস পরে নিজেরা নিজেরা একটা সম্মেলন করে, যেটা পুরোপুরি অগঠনতান্ত্রিক।’

অভিযোগ তোলা পক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছেন দাবি করে ফয়েজ বলেন, ‘তাদেরও বক্তব্য ছিল আমাদের সঙ্গে এক কাতারে এসে মিছিলে স্লোগান দেবে, কিন্তু সেটা আমরা দেখতে পাইনি। তাদেরকে পরিচালনার ক্ষেত্রে বাইরের কিছু মানুষের আধিপত্য দেখেছি।’

‘বাইরের মানুষ’ কারা, এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক ঘরানারই কিছু ব্যক্তি, যারা ছাত্র ইউনিয়নকে ভাগ করতে চান। তারা তাদেরকে বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আমরা যাতে একত্রিত হতে না পারি সে জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা সেসব তোয়াক্কা না করে আমাদের মতো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

‘তবে আমরা বিশ্বাস করি, কিছু অভিযোগ তুলে যারা ছাত্র ইউনিয়ন থেকে দূরে সরে গেছে তারা আবার ফিরে আসবে। আমরা সেই চেষ্টা আগেও করেছি এবং এখনও সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে। তাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের অভিযোগ আসছে তাতে আমরা চাইলে সাংগাঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারতাম, শাস্তিও দিতে পারতাম, কিন্তু আমরা সেটা করিনি।’

ফয়েজ তাদের বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার দাবি করলেও ওই অংশের কমিটির সহসভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় ও সহসাধারণ সম্পাদক মিখা পেরেগুকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ফয়েজ বলেন, ‘যে দুজনকে আমরা সাংগঠনিকভাবে শাস্তি দিয়েছি তাদের একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মিখা পেরেগু। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক সাইন জালিয়াতির অভিযোগ আছে। সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিই এবং তাকে যে সাহায্য করেছে সেই নজির আমিন চৌধুরী জয়কেও সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছি। এর বাইরে বিভাজন সৃষ্টি বা বিশৃঙ্খলা তৈরিতে যারা ভূমিকা রেখেছে তাদের কাউকে শাস্তি প্রদান করিনি।’

বিভাজন দূর করতে কাজ করে যাচ্ছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘এ সময়ে রাজনৈতিক যে সংকট চলছে, আশা করছি যারা দূরে সরে গেছেন আমরা একত্রিত হয়েই আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’

সংগঠনে বিভাজন নিয়ে আরেক পক্ষের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যেভাবে হাত বাড়িয়েছি, উল্টো পাশ থেকে সেভাবে আরেকটা হাত পাইনি। এক হওয়ার সুযোগ এখনও হারিয়ে যায়নি। সামনে এই কমিটির হাতে কিছুদিন সময় আছে, ওই কমিটির হাতেও কিছুদিন সময় আছে। এক হওয়ার জন্য আমাদের নানা মাধ্যমে চেষ্টা চলছিল, এখনও চলছে।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে সংগঠনের প্রাক্তনরাসহ অনেকেই উদ্যোগ নিয়েছেন। এ সময়ে প্রবল প্রয়োজনীয়তার জায়গা থেকেই আমাদের এক হওয়া প্রয়োজন। এক হওয়ার সদিচ্ছা আমাদের দিক থেকে আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর