করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শুরু হয়েছে স্কুল-কলেজে সশরীরে পাঠদান কার্যক্রম। প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে স্কুল-কলেজ প্রাঙ্গণের। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষে স্কুলে ভর্তিপ্রক্রিয়াও।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এই কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই স্কুলে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করা হবে।’
কবে নাগাদ ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে- এমন প্রশ্নে মাউশির মহাপরিচালক বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত করার পর সেই নীতিমালা অনুযায়ী স্কুলে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশা করছি, নভেম্বর থেকেই বেসরকারি স্কুলে এবং ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
তবে ভর্তির নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জানিয়েছেন, নীতিমালা চূড়ান্ত করার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গত বছরের মতো এবারও ভর্তি পরীক্ষার বদলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে নীতিমালা সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। করোনার ঝুঁকি এড়াতে এমন প্রস্তাব করা হয়েছে মাউশি থেকে। স্কুলে ভর্তিতে কীভাবে ঝুঁকি এড়ানো যাবে, সে বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’
তিনি জানান, গত বছরের মতো এবারও শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন ফরম অনলাইনে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হবে। ফলাফলও প্রকাশ হবে অনলাইনে।
মাউশি থেকে জানা যায়, ঢাকা মহানগরীর ৪৪টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিনটি ফিডার শাখাসহ তিনটি গুচ্ছ বা ভাগে বিভক্ত থাকবে। আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গ্রুপে পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারবে।
আর সারা দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনকালে থানাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবে। তখন প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে পছন্দক্রম অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করবে।
গত বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর আগে শুধু প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। আর দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তিতে পরীক্ষা নেয়া হতো। নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হতো জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়।
তবে প্রতিদিন সব শ্রেণিতে ক্লাস হচ্ছে না। শুধু চলতি বছর ও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস নেয়া হচ্ছে। আর অন্যান্য শ্রেণির মধ্যে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে দুই দিন এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এক দিন ক্লাসে আসতে বলা হয়েছে।
চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও সমমানের ইবতেদায়ি পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।