সমৃদ্ধ দেশ গড়তে দেশের যুবসমাজকে উন্নত মানসিকতাসম্পন্ন এবং বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
যুবসমাজের সামনে চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান জানান, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, বেকারত্ব, অপরাধ ও সহিংসতা সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার জন্ম দেয়। এ বিষয়ে যুবসমাজকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জাতীয় যুব দিবসের আয়োজনে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সোমবার বঙ্গভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অমিত সম্ভাবনাময় যুবসমাজকে অবশ্যই উন্নত মানসিকতাসম্পন্ন বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যাবতীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, কর্মসম্পাদনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি সুযোগকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে যুব উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
তবে যুব কার্যক্রম সুবিস্তৃত হবে, সমৃদ্ধ দেশ গঠন সম্ভব হবে বলেও মত দেন রাষ্ট্রপতি।
সম্ভাবনার সঙ্গে যুবসমাজের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে বলেও মনে করেন আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্য, অশিক্ষা, কর্মসংস্থানের অভাব, অপরাধ ও সহিংসতা সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার জন্ম দেয়। আজকাল প্রায়ই বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধের খবর প্রচারিত হয়। এতে অনেক যুবকের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সমাজে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ ব্যাপারেও যুবসমাজকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।’
যুবকদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘শুধু নিজে ভালো থাকলে চলবে না- অন্যরাও যাতে ভালো থাকে সে চেষ্টাও করতে হবে। মাতা-পিতা ও অভিভাবকদেরও তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার পাশাপাশি তারা যাতে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় উন্নয়নের মহাসড়কে উন্নীত হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি যুবসমাজকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার কাজে আত্মনিয়োগের উদাত্ত আহ্বান জানাই।’
দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। সংখ্যায় ৫ কোটিরও বেশি। তাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’-এর সদ্ব্যবহার করাকে প্রথম ও প্রধান কাজ বলে মনে করেন আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘সে জন্য যুবদেরকে উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করতে হবে। সরকার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রাম ও শহর নির্বিশেষে বেকার যুবকদের উদ্বুদ্ধকরণ, প্রশিক্ষণ প্রদান, ঋণসহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে তাদেরকে মানবসম্পদে পরিণত করছে। ফলে তারা কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সময়োপযোগী আধুনিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তোমরা নিজেদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবে এবং একই সঙ্গে ছোট ছোট উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সামাজিক ও আর্থিক দিক দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে মর্যাদাপূর্ণ জীবন-যাপন করবে। এতে তোমাদের অবস্থার উন্নতির সাথে দেশও দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে সমৃদ্ধির সুদৃঢ় সোপানে স্থায়ী অবস্থান নেবে।’