পদ্মা সেতুর নামে জালিয়াতি করে ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এবি ব্যাংকের সাবেক ইভিপি ও ম্যানেজার এবিএম আবদুস সাত্তারকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট। তাকে আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এসএম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতুর ঠিকাদার সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড ও চায়না মেজর ব্রীজ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে ৬টি ভুয়া কার্যাদেশ বানিয়ে ৭টি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ ঋণ প্রদানের মামলায় জামিন পাননি এবিএম আবদুস সাত্তার। তাকে আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এবি ব্যাংকের সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। গত ৮ জুন দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মামলাটি দায়ের করেন।
মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরী ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয় সাবেক ইভিপি ও শাখা ম্যানেজার এ বি এম আবদুস সাত্তার, এভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার আবদুর রহিম, এসভিপি ও সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার আনিসুর রহমান, ভিপি শহিদুল ইসলাম, এভিপি মো. রুহুল আমিন, ইভিপি ও হেড অব সিআরএম ওয়াসিকা আফরোজী, ভিপি, সিএমআরের সদস্য মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এসইভিপি ও হেড অব সিআরএম সালমা আক্তার, এভিপি ও সিআরএম সদস্য এমারত হোসেন ফকির, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, এসভিপি ও সিআরএমের সদস্য শামীম এ মোরশেদ, ভিপি ও সিআরএমের সদস্য খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, এভিপি ও সিআরএমের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য মাহফুজ-উল ইসলামকে।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, আসামিরা ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে একে অন্যের সহায়তায় জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ছয়টি জাল কার্যাদেশের বিপরীতে ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এ ছাড়া মামলায় উল্লিখিত এবি ব্যাংক কাকরাইল শাখার কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়া সাতটি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে আরও ১০ কোটি টাকা ঋণ দেন।পরে তা তুলে আত্মসাৎ করা হয়। সব মিলে আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।