একাত্তরে হত্যা, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা সম্পাদক আব্দুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায় যেকোনো দিন।
বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল সোমবার মামলাটির রায়ের জন্য এ সিদ্ধান্ত জানায়।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুলতান মাহমুদ সিমন। আর আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রাষ্ট্রনিয়োজিত আবুল হাসান।
প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুত সিমন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ আসামির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ ছিল। একটিতে ১০ জনকে হত্যার অভিযোগ। দ্বিতীয়টিতে পাঁচজনকে হত্যার অভিযোগ। এর মধ্যে দুইজনকে স্পটেই হত্যা, বাকি তিনজনকে ধরে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা। তৃতীয়ত, চারজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার অভিযোগ।
‘উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর রোববারই মামলাটি সিএভি (রায়ের জন্য যেকোনো দিন রাখা) করেছে আদালত। আশা করি আসামির সর্বোচ্চ সাজা হবে।’
এ মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে ২০১৮ সালের ৩ মে প্রসিকিউশন বরাবর প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
ওইদিন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান জানিয়েছিলেন, একাত্তরে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ ১৯ জনকে হত্যার অভিযোগে বগুড়া জেলার আদমদিঘী থানার কালাইকুড়ি গ্রামের আব্দুল মজিদ তালুকদারের ছেলে আব্দুল মোমিন তালুকদারের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এটি তদন্ত সংস্থার ৬৪তম প্রতিবেদন।
আসামি আব্দুল মোমিন তালুকদারের রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি আব্দুল মোমিন তালুকদার মুসলিম লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করে। আদমদিঘী থানার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে অন্যান্য রাজাকার ও পাকিস্তান বাহিনীকে সহযোগীতা করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদিঘী উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন।
তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক জানান, মোমিন তালুকদার বর্তমানে বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। মোমিন ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুই বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি পলাতক আছেন।