শাহেদা বেগম কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা। সোমবার সকালে পৌরসভার কার্যালয়ে এসেছিলেন মেয়ের জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য। সেখানে গিয়ে দেখেন পৌরসভার সব কার্যক্রম বন্ধ। ফলে নিরাশ হয়ে ফিরতে হয় তাকে।
শাহেদা বেগম জানান, ছোট মেয়ের স্কুলে জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে হবে। পৌরসভার নাগরিকসেবা বন্ধ, তা আগে থেকে জানা ছিল না। এদিকে স্কুলে সনদ জমা দেয়ার সময় শেষের দিকে হওয়ায় দুশ্চিন্তায় তিনি।
জাতীয় পরিচয়পত্রের কাজে পৌরসভার কার্যালয়ে এসেছিলেন আব্দুল মান্নান। কিন্তু তাকেও ফিরতে হয় হতাশ হয়ে।
তাদের মতো অনেকেই সোমবার সকালে পৌরসভা চত্বর থেকে সেবা না পেয়ে ফিরেছেন নিরাশ হয়ে।
ভোগান্তির শিকার পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, হঠাৎ করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত অনেকেই জানেন না। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই নাগরিক দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে অতি জরুরি কাজের জন্য সেবা চালু রাখার দাবি জানান তারা।
পৌরসভার সব ধরনের নাগরিকসেবা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহেনা আক্তার পাখি।
তিনি জানান, মেয়র মুজিবুরের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, চলমান সড়ক উন্নয়নকাজ, জাতীয়তা, জন্ম ও মৃত্যু সনদ দেয়াসহ পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক সুবিধা বন্ধ থাকবে।
কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্টে একটি মার্কেটের সামনে গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোনাফ সিকদারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত মোনাফকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মোনাফকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তার ভাই শাহজাহান রোববার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় পৌর মেয়র ছাড়া সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার প্রতিবাদে রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভা সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভায় সব ধরনের নাগরিকসেবা বন্ধের ঘোষণা দেন পৌর পরিষদ।
এ তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের রাস্তায় নামেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। শহরের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী পয়েন্ট, বাজারঘাটাসহ বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেন তারা।
এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ও মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে পর্যটন নগরী।