৩০২ কেজি হেরোইন ও ৫ কেজি কোকেন পাচার মামলায় মোহাম্মদ বাধন শেখ পারভেজকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিল করেছে আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবুল।
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি উত্তরার এক বাড়ি থেকে মাদক চোরাচালান দলের অন্যতম সদস্য চয়েজ রহমানকে গ্রেপ্তার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এরপর ৩০২ কেজি হেরোইন এবং ৫ কেজি কোকেন পাচারের অভিযোগে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় ২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি মামলা করে সিআইডি।
পরে চয়েজ রহমানের তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের কাছে কাউলা এলাকা থেকে পারভেজসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলায় হাইকোর্ট চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে জামিন দেয়।
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। পরে জুন মাসে তার জামিন স্থগিত করা হয়। ওই আবেদনের ধারাবাহিকতায় মামলাটি আজকে শুনানির জন্য আপিলের তালিকায় আসে। আদালত শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেয়।
২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর কলম্বোর কাছে দেহিওয়ালা এলাকার এক বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৭২ কেজি হেরোইন ও ৫ কেজি কোকেন উদ্ধার করে শ্রীলঙ্কার পুলিশ, নারকোটিক ব্যুরো ও স্পেশাল টাস্কফোর্স। ওই বাড়ি থেকে মোহাম্মদ জামালউদ্দিন ও দেওয়ান রফিউল ইসলাম নামের দুই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর দুই সপ্তাহ আগে একই এলাকা থেকে ৩২ কেজি হেরোইনসহ সূর্যমণি নামে আরেক বাংলাদেশি নারীকে গ্রেপ্তার করে শ্রীলঙ্কা পুলিশ।
১৫ দিনের মধ্যে এই বিপুল পরিমাণ মাদকসহ তিন বাংলাদেশির ধরা পড়ার ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে শ্রীলঙ্কার তরফ থেকে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় চয়েজ রহমানকে।
তারপর বিমানবন্দরের কাছে কাউলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ফাতেমা ইমাম তানিয়া, আফসানা মিমি, সালমা সুলতান, মোহাম্মদ বাধন শেখ পারভেজ ও রুহুল আমিন ওরফে সায়মনকে।
বাধন শেখ পারভেজের জামিন বাতিল প্রসঙ্গে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ জানান, চুক্তি মোতাবেক শ্রীলঙ্কা থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের কাছে গোপনীয় নথি পাঠিয়েছে। সেটা পর্যালোচনা করে মুল আসামি চয়েজ রহমানেরও জামিন বাতিল হয়েছিল। আজকেও বাধন শেখ পারভেজের জামিনও একইভাবে বাতিল করা হলো। হাইকোর্টের যে জামিন আদেশ দিয়েছিল সেটা পুরোপুরি বাতিল করে দিল আপিল বিভাগ।