বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আইনজীবী ছাড়া কোর্টে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে

  •    
  • ১ নভেম্বর, ২০২১ ১১:৩৪

আইনজীবী ছাড়া সরাসরি আদালতে দাঁড়িয়ে বিচার চাওয়া এক ব্যক্তির উদ্দেশে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে আসছেন কেন? একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া।’

আইনজীবী ছাড়াই একের পর এক বিচারপ্রার্থীর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সরাসরি দাঁড়ানোটা ফ্যাশন হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছে আপিল বিভাগ।

বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থী সোমবার আইনজীবী ছাড়া সরাসরি আপিল বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির আবেদন করলে আদালত এ মন্তব্য করে।

সকালে আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে প্রথমেই দুই নারী বিচারপ্রার্থী তাদের চাকরি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে আবেদন করেন। মানবিক দৃষ্টি দিয়ে আদালতের কাছে বিচার চান তারা।

জবাবে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের আইনমাফিক চলতে হবে। মানবিক আবেদন করবেন সরকারের কাছে। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখব না; আমরা দেখব আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে।‌

‘মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে সরকার। কোর্টে কোনো মানবিক-টানবিক নাই। মানবিক এতটুকুই করতে পারব, মামলাটি তাড়াতাড়ি শুনব।’ পরে আদালত মঙ্গলবার তাদের মামলাটি শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেয়।

দুই নারীর আবেদনের পরই আরেক বিচারপ্রার্থী দাঁড়ান তার আবেদন নিয়ে। নিজেকে বেকার যুবক দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে রায় পেয়েছি। মামলাটি আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে, কিন্তু রেলওয়ে আমাদের নিয়োগ দিচ্ছে না।’ এটি দেখে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা তো মহা মুশকিল। আপনার আইনজীবী কই?’

ওই সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে আসছেন কেন? একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনার আইনজীবী কে?’ জবাবে ওই বিচারপ্রার্থী বলেন, ‌‘পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।’

তখন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, ‘আপনার আইনজীবী থাকতে আপনি এখানে দাঁড়াতে পারেন না।’

প্রধান বিচারপতি বলেন,‌‘আগামীকাল থেকে তো দেখছি লাইন লেগে যাবে। আইনজীবী থাকলে আপনি দাঁড়াতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘‌আপনার মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড যিনি আছেন তাকে দিয়ে আবেদন দেন।’

এরপর আরেকজন আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। আমি মসজিদের মুয়াজ্জিন। আমি খুবই গরিব মানুষ। আমি মানুষের জাকাত ফেতরা নিয়ে খাই। স্যার আমার মামলটা বন্ধ হয়ে রয়েছে। যদি দয়া করে একটু দেখতেন।’

একের পর এক এভাবে আইনজীবী ছাড়া সরাসরি কোর্টে দাঁড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এরপর থেকে যেসব আইনজীবীদের ক্লায়েন্ট সরাসরি কোর্টে এসে দাঁড়াবে আমরা তার সনদ বাতিল করে দেব। আগামীকাল থেকে যারা দাঁড়াবে তাদের আইনজীবী থাকলে তাদের সনদ আমরা পাচঁজন মিলে বাতিল করে দেব।’

‌‘আপনার আইনজীবী আছে কি?’

আদালতের উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে মুয়াজ্জিন বলেন, ‌‘উকিল আছে। অনেক টাকা চায়।’

তখন আদালত বলে, ‌‘আপনি আইনজীবী না রেখে থাকলে আপনারটা শুনব। আপনার মামলার নম্বর দিয়ে যান।’

পরে তালিকায় থাকা মামলাগুলো শুনানির জন্য কল করতে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।

এ বিভাগের আরো খবর