বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্ত্রী জানে না স্বামী গরিব মেয়েদের বিয়ে করে পাচার করে

  •    
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ১৯:৩০

গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে সুজন সিকদার তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে একজনকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারও করে দিয়েছেন। বর্তমানে পাচারের উদ্দেশ্যে আরও এক নারীকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

একটি পাচারকারী চক্রের প্রত্যেকেরই স্ত্রী আছেন। তবে স্ত্রীকে না জানিয়ে গরিব পরিবারের মেয়েদের বিয়ে করে পাশের দেশ ভারতে পাচার করে দেয়াই তাদের কাজ।

রোববার প্রথম প্রহর রাত ২টার দিকে রাজধানীর বনানী থেকে সুজন সিকদার ও রমজান মোল্লা নামে চক্রটির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যব-১। তাদের আরও তিন থেকে চারজন সঙ্গী আছেন। তাদেরকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

রোববার বিকেলে কারওয়ান বাজার র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

তিনি বলেন, ‘পাচারকারী চক্রের টার্গেট দরিদ্র মানুষ। বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তারা সহজ-সরল মানুষগুলোকে ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। যার অধিকাংশই নারী। এসব নারীকে জোর করে কিংবা কৌশলে যুক্ত করা হয় ডিজে পার্টিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে, রোববার প্রথম প্রহর রাত ২টায় র‍্যাব-১-এর একটি দল বনানীর কড়াইল বস্তি এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য সুজন ও রমজানকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে এক ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়। অপর এক ভিকটিমকে তার বাড়িতে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করা হলে তাকেও ঘটনাটি জানিয়ে সতর্ক করা হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, সুজন সিকদার এই চক্রের হোতা। চক্রের সদস্যরা প্রথমে দরিদ্র সুন্দর নারীদের টার্গেট করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সম্পর্ক চলাকালীন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমদের কাছ থেকে তাদের ব্যক্তিগত ও আপত্তিকর ছবি সংগ্রহ করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা ভিকটিমদের বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য বিয়েও করেন। বিয়ের পর তাদের নগ্ন ও অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তাদের মোবাইলে ধারণ করেন। পরে ওইসব নারীকে পার্শ্ববর্তী দেশে লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির কথা বলে পাচার করে দেয়া হয়।

এ ক্ষেত্রে কোনো নারী যদি পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে রাজি না হন, তবে তাদের গোপন ছবি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন চক্রের সদস্যরা।

পাচারকৃত নারীদের সাধারণত বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় এবং জোর করে সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, চক্রটি যশোর সীমান্ত দিয়ে নারী পাচার করে। পাচারে সহায়তা করেন যশোর সীমান্ত পারাপারে পলাতক আসামি হোসেন। তিনি পাচার হওয়া নারীদের পার্শ্ববর্তী দেশে এই চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন।

গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে সুজন সিকদার তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে এক জনকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারও করে দিয়েছেন। বর্তমানে পাচারের উদ্দেশ্যে আরও এক নারীকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। রমজানও তার বর্তমান স্ত্রী মারা গেছে বলে অপর এক নারীকে বিয়ে করেছেন। এই দুই নারীকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের জন্য এক ভারতীয়র কাছ থেকে তারা ইতোমধ্যেই ২৮ হাজার অগ্রিম নিয়েছেন।

লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের স্ত্রীরা জানে না তাদের স্বামী গরিব পরিবারের নারীদের বিয়ে করে পাচার করে আসছে। গ্রেপ্তারকৃতদের পেছনে কাদের হাত আছে তা খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। আশা করছি, আমরা একটা বড় চক্রকে ধরতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর