বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নথি উধাও: কেবিনেটের চাবি থাকত দুজনের কাছে

  •    
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ১৭:১৬

স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব মো. নুর আলী বলেন, ‘সবাই সন্দেহের মধ্যে আছেন। আমরা পুলিশ ও সিআইডিকেও তদন্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করছি, সত্য উদঘাটিত হবে।’

সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার যে কেবিনেট থেকে ১৭টি নথি উধাও হয়েছে, সেই কেবিনেটের চাবি থাকত দুজনের কাছে। একজন আয়েশা সিদ্দিকা, আরেক জন জোসেফ সরদার। তারা দুজনই স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন।

তদন্তের অংশ হিসেবে এই দুজনসহ শাখার আরও চার কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে সিআইডির তদন্ত দল।

সিআইডি হেফাজতে নেয়ার আগে নিউজবাংলা কথা বলে আয়েশা সিদ্দিকার সঙ্গে। ফাইল কীভাবে গায়েব হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জোসেফ ভাই বুধবার যাওয়ার আগে ডাক ফাইলটা কেবিনেটে রেখেছেন। তখন সেখানে ১৭টা ফাইলই ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তিনি আসেন। দুপুর ১২টায় একটা পত্র নিষ্পত্তির জন্য তিনি ফাইল কেবিনেটটা খোলেন। খোলার পর দেখেন যে ১৭টা ফাইলের কোনোটিই নেই। এগুলো ছিল ক্রয়সংক্রান্ত ফাইল।’

আয়েশা সিদ্দিকা আরও বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন শাখার কর্মচারীরা যাওয়া-আসা করেন। চিকিৎসা শিক্ষক অধিশাখা, অতিরিক্ত সচিব ডিসপার্চ, যুগ্মসচিব অধিশাখা, যুগ্মসচিব-২, বিভিন্ন শাখার মানুষ এখানে বসেন। বিভিন্ন টাইপের ক্রয়সংক্রান্ত ফাইল এখানে ছিল। এর আগে একটি ফাইল হারিয়েছিল গত বছরের আগস্টের ৮ তারিখে। সেটি ছিল রাজশাহী মেডিক্যালের অতিরিক্ত বাজেটের ফাইল।’

স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের ২৯ নম্বর কক্ষ থেকে ১৭টি নথি হারানোর কথা জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এরপর রোববার সকালে সচিবালয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সিআইডির পুলিশ সুপার কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ক্রাইম সিন ইউনিটের একটি দল। তাদের সঙ্গে ছিলেন শাহবাগ থানা পুলিশেরও একটি দল।

পরিদর্শন শেষে সিআইডির পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা এসেছি ছায়া তদন্ত করতে। তদন্ত শেষে আমরা এ বিষয়ে হয়তো আরও বলতে পারব।’

জিডি সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অফিস করে নথিগুলো ফাইল ক্যাবিনেটে রাখেন। পরবর্তী সময়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কাজ করতে গিয়ে দেখেন ফাইলগুলো ক্যাবিনেটে নেই।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের ১৭ নথি উধাও হলেও তাতে কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব মো. নুর আলী।

সচিবালয়ে তার নিজ কক্ষে রোববার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে এই নথিগুলোর কপি আছে।

‘যে ফাইলগুলো হারানো গেছে, সেগুলো মন্ত্রণালয়ের ছোটখাটো ক্রয়সংক্রান্ত। তবে এগুলোর কপি ডিজি অফিসে আছে। তাই এগুলো হারানো গেলেও কোনো সমস্যা হবে না। তবুও আমরা জানতে চাই কে, কেন, কী উদ্দেশ্যে এগুলো সরিয়েছে।’

বুধবার নথি উধাও হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন নুর আলী। বলেন, ‘আমরা ওই কক্ষের কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা কেউ স্বীকার করেনি।’

সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করতে চায় মন্ত্রণালয়। নুর আলী বলেন, ‘সবাই সন্দেহের মধ্যে আছেন। আমরা পুলিশ ও সিআইডিকেও তদন্ত করতে অনুরোধ জানিয়েছি। আশা করছি, সত্য উদঘাটিত হবে।’

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিদর্শনের সময় উপসচিব (প্রশাসন) মো. সারোয়ার মোর্শেদ, উপসচিব (ক্রয় ও সংগ্রহ শাখা-২) নাদিয়া হায়দার এবং সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর জোসেফ সরদারকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত চলমান।’

গায়েব হওয়া ১৭টি নথিই ছিল ক্রয়সংক্রান্ত। নথিগুলো ইলেকট্রনিক ডাটা ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্রয় কার্যক্রম, নার্সিং এবং মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকল্পসহ বিভিন্ন বিষয়সংক্রান্ত।

এ বিভাগের আরো খবর