বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ‘রাজনীতি নেই’, ছাত্রলীগ কীভাবে?

  •    
  • ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ১৫:২৭

ছাত্রলীগের দাবি, ক্যাম্পাসে সংঘাতের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়। এটি ছাত্রলীগ নামধারী কিছু দুর্বৃত্তের কাজ। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা নির্দেশনা মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শিক্ষার সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখতে গত ৩ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ সভা-সমাবেশ, মিছিল, স্লোগান নিষিদ্ধ করেছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা আমলে নেয়নি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন।

তবে ছাত্রলীগের দাবি, ক্যাম্পাসে সংঘাতের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়। এটি ছাত্রলীগ নামধারী কিছু দুর্বৃত্তের কাজ। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, যারা নির্দেশনা মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শুক্রবার থেকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য শনিবার কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে চমেক কর্তৃপক্ষ। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষার্থী হোস্টেলগুলো। হঠাৎ করে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

কলেজ ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সংঘাত বিশ্লেষণে দেখা যায়, সংঘাতের মূল কারণ ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার, হল দখল, অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং, দলীয় পদ নিয়ে সমস্যা প্রভৃতি৷ আর ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের বিবদমান দুটি গ্রুপই এই সংঘাতের মূল কারণ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চমেকের ছাত্ররাজনীতি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের নিয়ন্ত্রণে ছিল। মেয়র হওয়ার পর ২০১৬ সাল থেকে পাঁচ বছর চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ২০ বছর তার অনুসারীদের দখলে ছিল এই ক্যাম্পাস। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী মূলত নাছির গ্রুপের নিয়ন্ত্রক।

সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে তিনিই চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হন। মূলত এরপর থেকে নওফেলের অনুসারীরা মেডিক্যাল কলেজে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাতে থাকে। আর এর জেরেই নাছির ও নওফেল অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের আগস্টে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি হয়েছিল। সে সময় দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে। এর মধ্যে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল রাতে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরদিন ২৮ এপ্রিলও উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে নাছির গ্রুপের অনুসারী দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলেন।

এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি, ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলার তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ, ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের বহিষ্কার, ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে ইন্টার্নদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলাও করেছিল।

রাজনীতি নিষিদ্ধের নির্দেশনা ছাত্রলীগ কেন মানছে না জানতে চাইলে চমেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন শিমুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আদর্শের রাজনীতি করি। প্রকাশ্যে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও আমরা আদর্শ চর্চা করি। তবে সম্প্রতি ক্যাম্পাসে সংঘাতের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়। এটি ছাত্রলীগ নামধারী কিছু দুর্বৃত্তের কাজ। তারা ছাত্রলীগের নাম বিক্রি করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চাইছে।’

নির্দেশনা যারা মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাহেনা আক্তার। রোববার দুপুরে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। নির্দেশনা বাস্তবায়নে তদারকিও করছি। তার মধ্যেও ছেলেরা নির্দেশনা মানছে না। তদন্ত কমিটি করেছি। হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শাস্তি দেয়া হবে। পাশাপাশি রাজনীতি নিষিদ্ধের নির্দেশনা যারা মানছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রাথমিক শাস্তিতে তারা না শুধরালে আমরা আইনি ব্যবস্থার দিকে যাব।’

এ বিভাগের আরো খবর