চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত মাহাদি আকিবকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৬ থেকে ৭ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা তৌফিকুর রহমান। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত দুজনকে রাতেই হাসপাতালের গেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছাদেকুর রহমান।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুজন হলেন এনামুল হাসান সীমান্ত ও রক্তিম দে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেলে দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। এর জের ধরে শনিবার সকাল ৯টার দিকে দুই পক্ষের আবারও সংঘর্ষ হয়। এতে মাহফুজুল হক, নাইমুল ইসলাম ও আকিব নামে তিনজন আহত হন।’
চট্টগ্রাম মেডিক্যালের আইসিইউ প্রধান রঞ্জন কুমার নাথ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছেলেটা (আকিব) গতকাল থেকে লাইফ সাপোর্টে আছে। আজকেও তাকে নিয়ে বোর্ড মিটিং হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ধীরে ধীরে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হবে।’
আকিব শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। আর মাহফুজ ও নাইমুল ইসলাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী নাছির গ্রুপের সদস্য হিসেবে পরিচিত।
সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শনিবার বিকেল ৫টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
চমেক ছাত্রলীগের নওফেল গ্রুপের অনুসারী ইমন শিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আকিবের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে সন্ধ্যায় অপারেশনের পর আইসিইউতে নেয়া হয়। এর দেড় ঘণ্টা পর থেকে তার লাইফ সাপোর্ট প্রয়োজন হয়। এখনও লাইফ সাপোর্টে আছে সে।’
এদিকে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ছাত্ররা হোস্টেল ছেড়ে দিলেও কিছু ছাত্রী এখনও হোস্টেলে আছে বলে জানিয়েছেন চমেক অধ্যক্ষ শাহেনা আক্তার।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু ছেলেদের হলে সমস্যা, তাই সন্ধ্যার মধ্যে তাদের হল ছাড়ার নির্দেশনা ছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী তারা হল ছেড়েছে। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা ছিল, তবে ঘোষণা একটু দেরিতে হওয়ায় তারা থেকে গেছে। কলেজ যেহেতু বন্ধ, আজকের মধ্যে তারাও চলে যাবে।’
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে গতকাল থেকে চমেক হোস্টেল ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহেদুল কবির।