ডিভোর্স না দিয়ে বিয়ে করার মামলায় ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি আদালতে হাজির হয়েছেন। উপস্থিত হয়েছেন মামলার অপর আসামি তামিমার মা সুমি আক্তারও।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালতে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় হাজির হন তারা।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ৩১ অক্টোবর তাদেরকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। সে অনুযায়ী হাজির হয়েছেন তারা।
নাসিরের আইনজীবী মোরশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আসামিরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছেন। আবেদনের ওপর শুনানির প্রস্তুতি চলছে।
৩০ সেপ্টেম্বরই আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসির ও তাম্মির বিয়ে আইন অনুযায়ী বৈধ হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসানকে ডিভোর্স দেয়াসংক্রান্ত কাগজপত্র জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। নাসিরকে বিয়ের আগে রাকিবকে ডিভোর্স দেননি তামিমা। তাই নাসির-তামিমার বিয়ে আইনতভাবে বৈধ হয়নি।
এরপরই আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে বাদীপক্ষ।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার স্বামী দাবি করে রাকিব হাসান মামলাটি করেন। নাসির-তামিমা ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে তামিমার মাকেও।
মামলায় নাসির-তামিমার বিরুদ্ধে বিয়ের তথ্য গোপন করে অন্যত্র বিয়ে, অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
চলতি বছরের ভালোবাসা দিবসে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে প্রেমিকা তামিমাকে বিয়ে করেন নাসির। তারা জানান, আইন মেনে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী বিয়ে করেছেন।
নাসিরের সঙ্গে বিয়ে বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমা বলেছিলেন, ‘বিয়ের বিষয়ে আমরা ক্রিস্টাল ক্লিয়ার।’
সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাসিরের সঙ্গে তামিমার বিয়ের খবর জানার পর মামলা করেন তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্রপত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে জানেন।
রাকিব জানান, তামিমার সঙ্গে ১১ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন তিনি। তাদের ৮ বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে। অথচ তাকে ডিভোর্স না দেয়ার পরও নাসির জেনেশুনে তামিমাকে বিয়ে করেন৷
অভিযোগে আরও বলা হয়, নাসিরকে বিয়ে করার আগে আরও একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তামিমা। তাকে বিয়ে করে ছয় মাস সংসার করার পর ফিরে আসেন তিনি। এরপর নতুন করে নাসিরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সৌদি এয়ারলাইনসের এই ক্রু।