টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বাড়ি থেকে তিন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত সুমি আক্তারের জা শাহনাজ সুলতানা।
মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে।
তবে পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সুমি আক্তার ও তার শাশুড়িকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন সুমির প্রেমিক শাহজালাল ইসলাম সোহাগ।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম জানান, নিহত সুমির স্বামী জয়নুদ্দিন সৌদিপ্রবাসী। জয়নুদ্দিনের বড় ভাই মো. জয়নালের স্ত্রী শাহনাজ রোববার সকালে হত্যা মামলা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, ‘ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় আমরা রহস্য অনেকটাই উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। সুমি আক্তার ও তার শাশুড়ি জমেলা বেগমকে হত্যার পর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। তিনি সুমিকে বিয়ে করেছিলেন বলে আমরা জেনেছি।’
এসপি বলেন, ‘বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে সুমি ও শাহজালাল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। প্রায় পাঁচ মাস তারা ঘর-সংসার করেন। এরপর সুমির বাবা জিন্নত আলী তাদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে সুমিকে বাড়িতে আটকে রেখে দেন। সে সময় সুমি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
‘তার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার শর্তে সুমির আগের স্বামী জয়নুদ্দিন বিদেশ থেকে ফিরে তাকে ঘরে ফেরত নেন। এর কিছুদিন পর জয়নুদ্দিন আবার বিদেশে চলে যান। সন্তান নষ্ট করায় শাহজালাল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।’
এসপি আরও বলেন, ‘সুমির স্বামী জয়নুদ্দিন বাড়িতে না থাকায় মাঝেমধ্যেই শাহজালাল সুমির শ্বশুরবাড়িতে আসতেন। ঘরের বারান্দার লোহার গ্রিলের চাবিও ছিল শাহজালালের কাছে।
‘গত শুক্রবার রাতে শাহজালাল সুমির ঘরে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে সুমি ও তার শাশুড়িকে হত্যা করেন। সুমি-জয়নুদ্দিনের শিশুসন্তানকেও হত্যার চেষ্টা করেন। এরপর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করেন। বিভিন্ন আলামত ঘেঁটে আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তারপরও ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’
টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম সজীব বলেন, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার শিশুটির মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের দিঘর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া এলাকার ওই বাড়ি থেকে শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয় হতাহতদের।