ইউপি নির্বাচনের জেরে পটুয়াখালী সদরের পর এবার সহিংসতা ঘটল বাউফলে।
সেখানে শনিবার রাতে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাউফলের নওমালা কলেজ সড়ক এলাকায় শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন জানান, দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়েছে। তবে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানিয়েছেন, রাতে আহত অবস্থায় মো. সজীব নামে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তিনি গুলিবিদ্ধ কি না তা নিশ্চিত হতে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মো. সজীব বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের নিজবটকাজল গ্রামে থাকেন। তাকে নিজের কর্মী বলে দাবি করেছেন ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদার।
স্থানীয়রা জানায়, নওমালা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেন বিশ্বাসের সমর্থক এবং বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহজাদা হাওলাদারের সমর্থকের মধ্যে উত্তেজনা চলছে দুই দিন ধরেই।
এর জেরে শনিবার রাতে ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাহা গাজীর বাড়ির সামনে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাধে। সে সময় কয়েকজন আহত হন।
আহত সজীব জানান, সংঘর্ষের সময় নৌকার সমর্থক শাহাবুদ্দিন আকন গুলি চালালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদার অভিযোগ করেন, ‘জনসমর্থন নাই বলে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করছে নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। তারা অবৈধ অস্ত্র ও কালো টাকার মাধ্যমে ভোট ডাকাতি করে বিজয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। পুলিশের উপস্থিতিতে আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর গুলি চালিয়ে তাদের আহত করা হয়েছে।’
গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠা নৌকার সমর্থক শাহাবুদ্দিন আকন জানান, ‘এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। ঘটনার সময় আমি আমার নিজ বাসায় অবস্থান করছিলাম। পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন তারা।’
বাউফল থানার ওসি আল মামুন জানান, দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। তারা ইটপাটকেল ছুড়েছেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়। তবে গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাসিফুল ইসলাম বলেন, ‘তার (সজীবের) ঘাড়ের বাম দিক দিয়ে কিছু একটা ঢুকেছে, সেটা প্রায় নিশ্চিত। তার অস্ত্রোপচার করতে হবে, যেটা এখানে সম্ভব না। অস্ত্রোপচারের আগে বলা যাবে না আসলে ওটা কী। যে কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এর আগে পটুয়াখালী শহরের লোহালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় শুক্রবার রাতে সহিংসতায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাই পৌর কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লাবুকে আটক করেছে পুলিশ।
লোহালিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বরত বিট পুলিশিং কর্মকর্তা উপপরিদর্শক বিপুল চন্দ্র জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে খেয়াঘাট এলাকায় নৌকা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সে সময় আহত হয়েছেন সদর উপজেলার লোহালিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জুয়েল মৃধাসহ কয়েকজন।