কুমিল্লার শাকতলা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি পাঁচতলা ভবনে কাজ করছিলেন মাসুদ ও মোস্তাকিম মিয়া। এ সময় মাচা ভেঙে তারা পাঁচতলার ওপর থেকে নিচে পড়ে যান।
পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ২০ বছর বয়সী ছোট ভাই মোস্তাকিমকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু ঘটে ২৩ বছর বয়সী মাসুদের।
মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে।
কুমিল্লার শাকতলা টমছম ব্রিজের দক্ষিণে নির্মাণাধীন ওই ভবনের ঠিকাদার আব্দুল কাদের খোকন জানান, একটি মাচার ওপর দাঁড়িয়ে পঞ্চম তলার বাইরের দেয়ালে আস্তরের কাজ করছিলেন তিন শ্রমিক। এ সময় হঠাৎ করেই মাচা ভেঙে দুই ভাই মাসুদ ও মোস্তাকিম নিচে রাস্তার ওপর গিয়ে পড়েন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা আরেকজন শ্রমিক একটি বাঁশ ধরে ঝুলে থাকেন। পরে তাদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়া হয়।
যাত্রাপথে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে মাসুদকে নামিয়ে দেয়া হয়। আর মোস্তাকিমকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে মাত্র আধঘণ্টার ব্যবধানে মাসুদ ও মোস্তাকিমের মৃত্যু ঘোষণা করেন দুই হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
নিহতদের চাচা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি বাড্ডায় থাকি। পুলিশের ফোন পেয়ে ঢাকা মেডিক্যালে যাই। তারা জানান, নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে পড়ে মারা গেছে আমার দুই ভাতিজা।’
একই সঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরটিকে বিনা মেঘে বজ্রপাতের সঙ্গে তুলনা করেন রবিউল। তিনি জানান, দুই ভাইয়ের আয় দিয়েই চলত গ্রামে থাকা তাদের পরিবার। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে তাদের বাড়ি।
বাড়িতে অসুস্থ কৃষক বাবা ও মা ছাড়াও নিহতদের এক ভাই ও বোন থাকেন। দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে শোকের সাগরে ভাসছে ভারতের সীমান্তঘেঁষা জগন্নাথপুর গ্রাম।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে তাদের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু।