বিচার বিভাগের মাথায় বিচারাধীন মামলার পাহাড় জমে আছে। এ অবস্থায় মামলার জট কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে (এডিআর) জোর দিয়েছে সরকার। দেশে এডিআর পদ্ধতি সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে প্রচলিত আদালতের ওপর মামলার চাপ কমবে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে শনিবার এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধের দ্রুত নিষ্পত্তিতে বিশ্বব্যাপী এডিআর পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বাড়ছে। বাংলাদেশ সরকারও এই পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার সরকার গঠন করে আরবিট্রেশন আইন, ২০০১ প্রণয়ন করেন। গত কয়েক বছরে সরকার বেশ কিছু আইনে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান যোগ করেছে।
‘আদালতের বাইরেও বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সব সরকারি চুক্তিতে আরবিট্রেশন ও মেডিয়েশনের জন্য উপযুক্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি উভয় আরবিট্রেশনের অ্যাওয়ার্ড কার্যকর করার পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইন আধুনিকায়নেরও উদ্যোগ নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রথম ও একমাত্র বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিয়াক ১০ বছর ধরে কাজ করছে। সমঝোতার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিয়াকের সহায়তায় ১০ কোটি টাকার সরকারি অনুদান প্রক্রিয়াধীন।
কোভিড-১৯ সংকটকালে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির ভার্চুয়াল শুনানিতে বিয়াকের ভূমিকার প্রশংসা করেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘করোনাকালে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আদালতের বিচার কাজ পরিচালনার জন্য সরকার আইন করেছে। বিচার বিভাগ এই আইন প্রয়োগ শুরু করেছে। বিচার বিভাগে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে সরকার ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প প্রণয়ন করছে।
ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক) ‘ভার্চুয়াল বিশ্বে বিরোধ নিষ্পত্তিতে কোভিড-১৯-এর প্রভাব’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বিয়াক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি প্রসারের লক্ষ্যে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। এক দশকে অনেক বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিয়াক সক্ষম হয়েছে।’
সেমিনারে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমান, বিয়াকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ এ রুমী আলী, আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক আফজাল, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়রা আজম, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ফারহানা হেলাল মেহতাব ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম আলোচনায় অংশ নেন।