এবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত মাংস না দেয়াকে কেন্দ্র করে বর ও কনেপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
মৌলভীর দোকানের নিরিবিলি কমিউনিটি সেন্টারে শনিবার বেলা দেড়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, নিরিবিলি কমিউনিটি সেন্টারে শনিবার দুপুরে ছদাহা পূর্ব কাজীর পাড়ার (খামারপাড়া) কালা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহানের সঙ্গে নোয়াখালীর সুবর্ণচর চরওয়াবদা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের (বর্তমানে চন্দনাইশের হাছনদণ্ডীর বাসিন্দা) জসিম উদ্দিন ফারুকের মেয়ে মুক্তা বেগমের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল।
মেয়ের চাচা আলাউদ্দিন জানান, বিয়েতে বরপক্ষের ৩০০ লোককে খাওয়ানোর কথা থাকলেও বেলা দেড়টা পর্যন্ত তাদের ৪০০ জনেরও বেশি লোককে খাওয়ানো হয়। এ সময় খাবার টেবিলে বরপক্ষের এক ব্যক্তিকে তৃতীয়বার অতিরিক্ত গরুর মাংস এনে না দেয়ায় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। ঘটনা থামাতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। পরে বর নিজে এসে মারামারিতে যোগ দেন। এতে স্থানীয়সহ উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হন।
আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন জসিম উদ্দিন ফারুক, রাশেদা বেগম, বাবুল, মোহাম্মদ শাহজাহান, মানিক, মো. রফিক, হুমায়ূন।
ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে এ ব্যাপারে এখনও কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি।
সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গায় মাংস বেশি খাওয়াকে কেন্দ্র করে বর ও কনেপক্ষের সংঘর্ষের জেরে একটি বিয়ে ভেঙে যায়। পরে বর সবুজ আলী ও কনে সুমি আক্তার আবার লুকিয়ে বিয়ে করেন।
সবুজ আলী বলেন, ‘রোববার বিয়েবাড়িতে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আমার ও কনে সুমি আক্তারের পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে আমার পক্ষের তিনজনকে মারধর করা হয়। পরে উভয় পক্ষ বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। কিন্তু সুরাহা না হওয়ায় বিয়েবিচ্ছেদ হয়। রাতে সুমি আমাকে ফোন করে। একপর্যায়ে আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারি। সোমবার সকালে সুমি ঝিনাইদহ চলে এলে রাতে আমরা বিয়ে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে ২ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়। তারপর থেকে সুমির সঙ্গে আমার সম্পর্ক আরও গভীর হয়। উভয় পরিবারের ভুল-বোঝাবুঝির কারণে তো আমরা আলাদা হতে পারি না। সুমি আমার সঙ্গে অনেক ভালো আছে।’
বিয়েবিচ্ছেদের কারণ জানতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার দশমী গ্রামে যান নিউজবাংলার প্রতিবেদক। সেখানে কথা হয় কনের বাবা নজরুল ইসলামের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আসলে বিয়ের দিন বরপক্ষ খুব খারাপ আচরণ করে আমাদের সঙ্গে। বিয়েতে দেয়া গায়েহলুদের উপহার তারা ফেরত নিয়ে আসেন। এ ছাড়া খাবার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বরপক্ষের লোকজন। একপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে তাদের গন্ডগোল হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর রাতেই উভয় পক্ষ বসে। কোনো সমাধান না হওয়ায় বিয়েবিচ্ছেদ হয়। পরে আমার মেয়ে আবারও সবুজের কাছে চলে যায়।’
এ বিষয়ে সবুজ আলীর ছোট মামা ফারুক হোসেন বলেন, ‘গায়েহলুদের উপহার ফেরত দেয়াকে কেন্দ্র করে মূলত বাগ্বিতণ্ডা হয় কনেপক্ষের সঙ্গে। পরে তারা আমাদের মারধর করে। ঘটনার রাতেই বিয়েবিচ্ছেদ হয়।’
তিনি জানান, সবুজ বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। বাবা মারা যাওয়ার পর ৫ বছর আগে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সৌদি আরবে যান সবুজ। সেখানে থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনে বিয়ে হয় তাদের।