সাইবার অপরাধ দমনে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সক্ষমতা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, ‘দেশে সাইবার ক্রাইম যেভাবে উন্মোচিত হচ্ছে, সেটি ধারণার বাইরে বেড়ে যাচ্ছে। সাইবার অপরাধ দমনে আমরা সেভাবেই আমাদের পুলিশকে তৈরি করছি। পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট বড় আকারে করতে হবে।’
শনিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে শহীদ শিরু মিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২১-এর উদ্বোধন ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘টেকনোলজি ব্যবহারের ভালো দিক আছে, আবার খারাপ দিকও আছে। তবে আমাদের ভালো দিকটা বেছে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দেখেছি, যে ধরনের উসকানি আসছিল, যেভাবে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, তারা একটি ভায়োলেন্সের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। সেটাও কিন্তু আমাদের জনগণ ও পুলিশ একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ করেছে। আমরা সেই জায়গা থেকে নিস্তার পেয়েছি। একটি বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারত। কারণ যে যার ধর্ম আমরা হৃদয় দিয়ে পালন করি।’
সাম্প্রদায়িক হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে এলাকায় সহিংসতা হয়েছে, আমাদের পুলিশ বাহিনী সেই এলাকার জনগণের সঙ্গে মিলে অপরাধীদের ধরে নিয়ে আসছে। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন জনগণও তাদের ধিক্কার দিচ্ছে। এটাই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের দায়িত্ব। আমরা যেটা চাচ্ছি, সেই কাজটি পুলিশ ও জনগণ করে দিচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে সাইবার ইউনিট আমরা করেছি, কিন্তু সেটা ছোট আকারে আছে। সাইবার ইউনিট বড় আকারে করতে হবে, আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। অনেক অনেক দূর পথ হেঁটে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাহিনীতে এখন দুই লাখের ওপর পুলিশ সদস্য। আমরা সঠিক সময় সঠিক কাজটি করছি বলে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, পুলিশ বাহিনী তোমরা জনতার পুলিশ হও। আজ ধীরে ধীরে পুলিশ জনতার পুলিশ হতে চলেছে। সম্প্রতি যে মহামারির দৃশ্য দেখলা, ছেলে তার বাবা-মাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে এসেছে। এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই তাদের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করেছে। তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করছে। এ জন্যই আমরা অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় দেশ যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ ছিল বলে আমরা সেই জায়গাতে যেতে পেরেছি। পৃথিবীর অনেক দেশেই কমিউনিটি পুলিশিংয়ে সুফল পেয়েছে। আমাদের দেশেও সেটি পাচ্ছি।’
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের অনেক দায়িত্ব উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তি রক্ষার জন্য তো ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে পারি না। ঘরে ঘরে যে জনগণ আছে, তারা যদি রিয়েল টাইম ইনফরমেশন দিতে পারেন, তাহলে অনেক ঘটনা থেকেই আমরা বাঁচতে পারি। অনেক ঘটনা ঘটবে না।’
কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা বিভিন্ন জায়গায় থেকে পুলিশকে সহযোগিতা করছেন আপনারা, সেভাবে সহযোগিতা করুন। আপনারা কমিউনিটিকে সজাগ রাখুন। কেউ ক্রাইম করার আগেই তাকে বলুন, ক্রাইম করলে জেলে যেতে হবে। ক্রাইম করলে তোমাকে চিহ্নিত করা হবে। আপনারা এই আবেদনটি রাখেন, তারপরে অবশ্যই ক্রাইমকে দমন করতে পারব।’