ফেনীতে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আরও এক আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর নাম রবিউল হক (৩০)। তিনি ছাগলনাইয়া উপজেলার মধ্যম মটুয়া গ্রামের আবদুল গনির ছেলে। এ নিয়ে ফেনীর ঘটনায় আদালতে মোট চার আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার ফেনী কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানী এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার বিকেলে রবিউলকে ফেনীর সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে পাঠানো হয়। পরে তিনি গত ১৫ অক্টোবর ফেনীতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে রবিউলকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মধ্যম মটুয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান শুনানি শেষে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
স্বীকারোক্তিতে রবিউল আদালতকে জানান, কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার প্রতিবাদ জানাতেই তারা মূলত জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোকজনও ছিল।
গত ১৫ অক্টোবর রাতে ফেনী শহরের কালীপাল গাজীগঞ্জ মহাপ্রভুর আশ্রম, ট্রাংক রোড ও বড় বাজারের দুটি কালীমন্দিরসহ শহরের তাকিয়া রোডে হিন্দুদের বেশ কিছু দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পরে পুলিশ, র্যাব ও মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ফেনী মডেল থানায় মোট চারটি মামলা করা হয়। র্যাব ও পুলিশের অভিযানে এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান জানান, ফেনীতে সাম্প্রদায়িক হামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও চিত্র দেখে ও যাচাই করে আসামি গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোনো নিরপরাধ লোক যেন হয়রানির শিকার না হন, সেটাও দেখা হচ্ছে।
এ ছাড়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন মাহফুজুর রহমান। জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত আছে।