নিজের সাবেক স্ত্রীকে খুন করতে গিয়ে ভুলে অন্য একজনের স্ত্রীকে খুন করলেন সেকুল মিয়া নামের এক ট্রাক ড্রাইভার। চার বছর আগে স্ত্রী শেফালি আক্তারের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তার।
সম্প্রতি পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে সেকুলকে আবারও বিয়ে করতে রাজি হন শেফালি। কিন্তু এক মাস আগে শেফালি অন্য একজনকে বিয়ে করে ফেলেন।
শুক্রবার সকালে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিংয়ে যান সেকুল। সেখানে সাবেক স্ত্রী শেফালিকে বোরকা পরা অবস্থায় একটি রিকশার মধ্যে দেখতে পেয়ে তারা ওই রিকশার পিছু নেন।
একপর্যায়ে রিকশাটির গতিরোধ করে এর আরোহীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক আঘাত করেন সেকুল। পরে আঘাত পাওয়া নারী রিকশা থেকে নিচে পড়ে গেলে সেকুল বোরকার মুখ খুলেই বুঝতে পারেন ওই নারী তার স্ত্রী নন। শেফালি তখন পাশেই অন্য একটি রিকশায় ছিলেন। সেকুল যাকে আঘাত করেন তার নাম আয়েশা। নিজের ভুল বোঝার পর সেকুল নিজেই আয়েশাকে হাসপাতালে নিতে চেষ্টা করেন। তখন স্থানীয়রা তাকে ধরে পিটুনির পর পুলিশে দেন।
আয়েশার স্বামী রুবেল হোসেন জানান, রিকশায় করে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে আদাবর নর্দা হাউজিং বাজার চৌরাস্তা এলাকায় তার স্ত্রীর গতিরোধ করেন দুজন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পিঠে ও হাতে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন।
ঘটনার পর কাজল নামের এক পথচারী অন্যদের সহায়তায় আয়েশাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। খবর পেয়ে রুবেলও যান হাসপাতালে।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালে আয়েশাকে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। পাশাপাশি অপারেশন করে রক্তক্ষরণ বন্ধেরও চেষ্টা করা হয়।
পরে অপারেশন থিয়েটার থেকে তাকে নেয়া হয় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান আয়েশা।
মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, সেকুল মিয়া পাঁচ বছর আগে শেফালিকে বিয়ে করেন। চার বছর আগে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। সেকুল মিয়া পেশায় ট্রাকচালক। তিনি গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় থাকেন। শেফালিকে তিনি আবার বিয়ে করতে চাইলে সেকুলের কাছ থেকে শেফালি টাকাও নেন।
দুলাল হোসেন বলেন, ‘নিহতের পরিবার এখনও হাসপাতালে আছে। নিহতের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’