চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারে তিনটি ব্যারিয়ার (ভারী যানবাহনরোধক) বসানোর কাজ চলছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফ্লাইওভারের মুখগুলোতে ব্যারিয়ায় নির্মাণ শুরু করে ফ্লাইওভার তদারকি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের তিনটি প্রবেশমুখে ব্যারিয়ার বসানো শুরু হয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করে ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।’
চট্টগ্রামের এম এ মান্নান ফ্লাইওভারে আরাকান সড়কমুখী র্যাম্পে দুটি পিলারে ফাটল দেখা দেয়ার কারণে সোমবার রাত ১০টা থেকে ওই অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি ফেসবুকের একটি পোস্টের মাধ্যমে জেনেছি। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাটল দেখতে পাই। তাই নিরাপত্তার জন্য র্যাম্প দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।’
তিনি জানান, মূল ফ্লাইওভারটি নগরের শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত। সেদিকে কোনো সমস্যা না থাকায় ওই অংশে যান চলাচল করছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারমুখী গাড়িগুলো এই ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচল করছে।
যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরের শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত এম এ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
২০১২ সালের নভেম্বরে ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে ১৪ জন মারা গেলে এর নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব পায় সেনাবাহিনী। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের র্যাম্পে ফাটলের বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে এম এ মন্নান ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ফাটল পায়নি বলে দাবি করেছে বিশেষজ্ঞ দল। চট্টগ্রাম নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, যাকে ফাটল বলা হচ্ছে, সেটি আসলে বের হওয়া ফোম।
নিউজবাংলাকে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের (ডিপিএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সোবহানের নেতৃত্বে একটি দল বুধবার দুপুরে ওই পিলার পরিদর্শনে যায়। এই দলে ডিপিএমের পরিচালক শাহাজাহান আলম ও ডিপিএম স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার সামি মুহাম্মদ রেজাও ছিলেন। তারা ওই পিলারে কোনো ফাটল খুঁজে পাননি।
‘ওই র্যাম্প নির্মাণের সময় পিলারের জয়েন্টে ফোম ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত ওই ফোমগুলো বের হয়ে ছিল। ওটা ফাটলের মতো দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞ দল পরিদর্শনের সময় ফোমগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। এ সময় ফোম ও খোলা কংক্রিট পেয়েছি, এটা নর্মাল।’