বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুলিশ সেজে ডাকাতি

  •    
  • ২৯ অক্টোবর, ২০২১ ১৩:০১

র‍্যাব জানায়, শামীম ২০০৫ সালে ঢাকায় আসেন। একপর্যায়ে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং মাদক কারবারিদের সঙ্গে কারবারে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে একটি ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন।

ঢাকার সাভার থেকে পুলিশের পরিচয়ে ডাকাতি করা চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

উপজেলার রাজাসনে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের সময় ওই ছয়জনের কাছ থেকে আসল ও নকল দুটি পিস্তল, একটি গুলি, পিস্তল টাইপ লাইটার, একটি কভারসহ হ্যান্ডকাফ, একটি ওয়াকিটকি, দুই সেট পুলিশ ইউনিফর্ম, পুলিশ জ্যাকেট, পুলিশ বেল্ট ও ভুয়া পুলিশ আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও তাদের কাছে ছিল দুটি রামদা, একটি ডেগার, একটি চাপাতি, দুটি ছুরি, দুটি টর্চলাইট, ৪৬৭টি ইয়াবা বড়ি, ৩০ বোতল ফেনসিডিল, দেড় কেজি গাঁজা, সাত গ্রাম হেরোইন, পাঁচ লিটার চোলাই মদ, ১৯টি মোবাইল ও ৪৪ হাজার ৫৭০ টাকা।

গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন চক্রের হোতা শামীম রেজা এবং সদস্য হেলাল উদ্দিন, মো. পারভেজ, ওয়াসিম ইসলাম, নাইম খান ও ফেরদৌস আহমেদ রাজু।

র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলন

কারওয়ানবাজারে মিডিয়া সেন্টারে শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, গ্রেপ্তারকৃত শামীম রেজা কিশোর বয়স থেকেই অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তিনি গ্রামের একটি স্থানীয় স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

র‌্যাব জানায়, শামীম ২০০৫ সালে ঢাকায় আসেন। একপর্যায়ে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং মাদক কারবারিদের সঙ্গে কারবারে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে একটি ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি রাতের আঁধারে পুলিশের ভুয়া ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় টর্চ লাইট দিয়ে গাড়ি থামিয়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল এবং দামি জিনিসপত্র তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে লুটপাট করত।’

শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব জানায়, শামীম ২৫ থেকে ৩০টি অটোরিকশার মালিক। তার নামে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি নিজেকে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে পরিচয় দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র, নকল আগ্নেয়াস্ত্র, নকল আইডি কার্ড, ইউনিফর্ম, ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও চাঁদাবাজি করতেন। তিনি সাভার এলাকায় একটি সক্রিয় ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলেন।

র‌্যাব আরও জানায়, শামীম বিভিন্ন সময়ে ভুয়া পুলিশ অফিসার সেজে তার বাহিনী দিয়ে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা ও বানোয়াটভাবে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতেন।

গ্রেপ্তারকৃত সব আসামির নামে সাভারসহ বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানায় র‌্যাব।

পুলিশের যা প্রয়োজন, সবই ছিল শামীমের

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক বলেন, ‘এর আগেও শামীম রেজা একাধিকবার চুরি, ছিনতাই, প্রতারণা ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর জামিন নিয়ে বের হয়ে এবারই প্রথম হুবহু পুলিশের ইউনিফর্ম পরে অভিনব প্রতারণায় নামেন। শুধু ইউনিফর্মই নয়, একজন পুলিশের যা যা প্রয়োজন, সবকিছুই শামীম সংগ্রহ করেছিলেন।’

চক্রের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জমিজমা সংক্রান্ত সাভার ও আশুলিয়ায় বিভিন্ন দালালি করে। তারা দালালির জন্য তাদের দলবল নিয়ে জমিজমা দখলে করে। এ ছাড়াও পাওনা টাকা উদ্ধারেও তারা পুলিশের পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতারণা করত।’

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম পরে ডাকাতির কাজ করা এ ধরনের কাজ আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এর আগেও ডিবি ও র‍্যাব একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছে। কারণ রাতের বেলা সড়কে পুলিশ সদস্য সেজে চেকপোস্ট বসিয়ে টহল দিলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হবে।

‘তবে এ ধরনের প্রতারণা যে বা যারাই করছে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছে।’

পুলিশের আইডি কার্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে যেভাবে তৈরি করা হয়, ঠিক সেভাবেই তারা তৈরি করেছিল, তবে পুরোপুরি তারা বানাতে পারেনি, তবে এই আইডি কার্ড যারা তৈরি করেছে, তারাও আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে এই মামলায় আসামি করা হবে।

‘বিভিন্ন টেইলার্স আছে যারা পুলিশের ইউনিফর্ম তৈরি করে। তাদের উচিত আসলেই পুলিশ কি না এবং পরিচিত দেখে যাচাই-বাছাই করে ইউনিফর্ম দেয়া। ঢাকাসহ জেলাগুলোতেও ইউনিফর্ম তৈরি করা হয়।’

গ্রেপ্তার ছয়জনের মধ্যে হেলাল গাড়িচালক, পারভেজ মেকানিক, ওয়াসিম ইলেকট্রিশিয়ান। বাকি দুজন সহকারী হিসেবে কাজ করত। তারা গত তিন চার বছর ধরে ডাকাতির কাজে জড়িত।

সাধারণ মানুষ আসল ও নকল পুলিশ কীভাবে চিনবে জানতে চাইলে র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে সদস্য পরিচয় দিচ্ছেন, ভুক্তভোগীরা তাদের পরিচয় দেখতে চাইবেন। স্থানীয় থানা পুলিশ কিংবা র‍্যাবকে জানালেও ভুক্তভোগীরা আসল-নকল পুলিশ সম্পর্কে জানতে পারবে।’

এ বিভাগের আরো খবর