বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় করা মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে বৃহস্পতিবার আসামি মোরশেদ অমর্ত্য ইসলামের পক্ষে আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু আংশিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
আইনজীবী ১৯৭ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে আসামি অমর্ত্য ইসলাম ঘটনায় জড়িত নন বলে প্রমাণের চেষ্টা করেন। মামলার এজাহার, চার্জশিট এবং ট্রাইব্যুনালে দেয়া সাক্ষ্যের তথ্য তিনি ধারাবাহিক উপস্থাপন করেন। আসামি অমর্ত্য ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
আইনজীবী বলেন, ‘উপস্থাপিত ৪৬ জন সাক্ষীর এক জন সাক্ষীও আদালতের সামনে আসামি মোরশেদ অমর্ত্য ইসলামের নাম বলেন নাই। মামলার ২৫ জন আসামি, ২২ জন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত এবং ৩ জন পলাতক রয়েছেন। ঘটনার সাথে অমর্ত্যের জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও মামলার সাক্ষীরা প্রমান দিতে পারেননি। তাই এই আসামিকে খালাস দেয়ার মাধ্যমেই ন্যায় পাওয়ার আবেদন করছি। নিরাপরাধ একজন মেধাবী ছাত্র যেন শাস্তি না পায়, সেই প্রার্থনা করছি।’
আসামির পক্ষে বৃহস্পতিবার আংশিক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে বিচারক ৩১ অক্টোবর অবশিষ্ট যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।
যুক্তিতর্ক উপস্থপনকালে কারাগারে থাকা ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানির পর তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে আসামিরা। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান।
গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটিতে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অপর তিন আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেনি।
এরপর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলায় কিছু ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পুনরায় চার্জগঠনের আবেদন করেন।