প্রতিবাদ শব্দটিকে সরকার নির্বাসনে পাঠিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘এক লাফে সাত টাকা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এক লাফে তেলের দাম সাত টাকা বাড়া অসম্ভব ব্যাপার। তবে এ দেশে সম্ভব। কে এই প্রতিবাদ করবে? প্রতিবাদ করলে তো আপনাকে যেতে হবে শ্রীঘরে অথবা লাল ঘরে। প্রতিবাদ বলে যে শব্দটি গণতন্ত্রে স্বীকৃত, সেই শব্দটিকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা। এটাই হলো বাস্তব অবস্থা।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত ‘চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি’র প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম, মরিচের দাম, চালের দাম, তেলের বাড়ুক- এই সরকারের কী যায় আসে? দাম বাড়লে তাতে কী? যারা দাম বাড়িয়েছে, বাজার সিন্ডিকেটে লুটপাটের মাধ্যেমে বিশ্বের উন্নত দেশে তাদের বাড়িঘর হচ্ছে। বাংলাদেশের নিম্ন মধ্যম আয়ের মানুষ বাঁচল না মরল, তাতে তো তাদের কিছু যায় আসে না।’
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নোয়াখালী-কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনায় যাদের নাম উঠে এলো সবাই কিন্তু যুবলীগ-ছাত্রলীগ। রংপুরের পীরগঞ্জে যে ছেলেটির নাম এলো, তাকে ছাত্রলীগ বহিষ্কার করেছে। কিন্তু এরপরও বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে থাকলে আর শেখ হাসিনার মতো প্রধানমন্ত্রী থাকলে এটা অসম্ভব ব্যাপার না।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে এ ধরনের মিথ্যাচারের অন্ধকার এসেছে বাংলাদেশে। কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। এ দেশে চালের দাম বেশি, সয়াবিন তেলের দাম বেশি, গ্যাস দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে, বৃদ্ধি পেয়েছে সুপেয় পানির দামও। মানুষ ক্ষুব্ধ, তাই একটি ঘটনা ঘটাও, মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে থাকবে। যে কারণে তোমরা কুমিল্লা-নোয়াখালীর দিকে তাকাও, দৃষ্টি ওই দিকে থাকবে। তোমরা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথা বলো না। এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের কৌশল।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে অনেকেই বলেছে, পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে আইডি কার্ড চাচ্ছে, ব্যবসায়িক লাইসেন্সসহ অন্যান্য সার্টিফিকেট চাচ্ছে। এটার কারণ, বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানো। তবে আপনাদের কোনো লাভ হবে না। যারা অত্যাচারী, মানুষের ওপর নির্মমতা দেখায়, তারা ইতিহাসে টিকে থাকেনি। তারা জনগণের শত্রু। তাদের পতন হবেই এবং সত্যের জয় হবেই।’
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ শ্রমিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।