দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলায় সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক ধর্মীয় সহিংসতায় এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ জন মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৪ জন মুসলমান এবং তারা হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এবং ২ জন হিন্দু মারা যায়। একজন সাধারণ মৃত্যু এবং অন্যজন ডুবে মারা যায়।
‘কাউকে ধর্ষণ করা হয়নি এবং একটি মন্দিরও অগ্নিসংযোগ বা ধ্বংস করা হয়নি। তবে দম্পতি বা দেব-দেবী ভাঙচুর করা হয়। সমস্ত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এখন তারা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।’
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পুনর্নির্মাণের কথা জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘পুড়ে যাওয়া দেড় ডজন দরিদ্র ঘর পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে এবং সবাই ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। দুর্ভাগ্যবশত, কিছু উত্সাহী মিডিয়া এবং ব্যক্তি ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শেখ হাসিনা সরকারকে বিব্রত করার জন্য মূলত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর মৃত্যু এবং ধর্ষণের রান্নার গল্প ছড়াচ্ছে।
‘সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রতিটি পূজামণ্ডপের জন্য সরকার অর্থ প্রদান করে এবং সপ্তাহে ২৪/৭ দিন তাদের সকলকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য পুলিশ বাহিনীর ঘাটতি থাকায় পৃথক বাড়িসহ প্রতিটি জায়গায় পূজামণ্ডপের বিস্তার ঘটেছে। এই ধরনের অপব্যবহারের ঘটনা এড়াতে, পূজামণ্ডপ আয়োজকদের উচিত তাদের মণ্ডপগুলিকে অযত্নে না রাখা।’
কুমিল্লার ঘটনা নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উল্লেখ্য, পূজামণ্ডপে কোনো উপাসক বা আয়োজক না থাকা অবস্থায় একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের একটি কপি একজন ডায়েটির (দেবী) পায়ের কাছে রেখে যায় এবং অন্য একজন তার একটি ছবি তুলে সোশ্যালে আপ করে দেয়। মিডিয়া, ফেসবুক যা ক্ষোভের জন্ম দেয়, যা ভাঙচুর এবং লুটপাটের দিকে নিয়ে যায়।’
দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ের একটি মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নে ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় এবং পরদিন দুপুরে একই উপজেলার চৌমুহনী পৌর এলাকায় ১১টি পূজামণ্ডপে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। লুটপাট করা হয় মন্দিরের আসবাব, স্বর্ণালংকার; ভাঙচুর করা হয় প্রতিমা।
ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তুলে গত ১৭ অক্টোবর রাতে পীরগঞ্জের রামনাথপুর উত্তরপাড়া হিন্দুপল্লিতে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় হিন্দুদের বাড়িঘর; দেয়া হয় আগুন। লুটপাটও করা হয় এসব বাড়িতে।