ব্রয়লার মুরগির দাম মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকার বেশি কমে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পেলেও হতাশ হয়ে পড়েছেন মেহেরপুরের জেলার প্রান্তিক খামারিরা।
জেলায় গত দুই-তিন দিনে মুরগির খুচরা বাজারে কেজিতে দাম কমেছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। খুচরা বাজারের পাশাপাশি একই হারে দাম কমেছে খামার পর্যায়ে।
খামারিরা বলছেন, ব্রয়লারের মাংসের দাম বাড়ায় বাচ্চা ও খাবারের দামও বেড়েছে। তারপরও দীর্ঘদিন লোকসানের পর লাভের আশা করেছিলেন তারা। তবে এখন ফের লোকসানের আতঙ্কে রয়েছেন জেলার ছোট-বড় প্রায় হাজার খামারি।
বৃহস্পতিবার মেহেরপুরের বিভিন্ন মুরগির বাজার ও খামার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকায়। অথচ দুই দিন আগেও এর দাম ছিল ১৮৫-১৯০ টাকা।
খামারিরা জানান, কয়েক দিন আগেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে ব্রয়লার কিনেছেন ১৪৫ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে। বৃহস্পতিবার সেই মুরগিই বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।
তারা জানান, ব্রয়লারের খাদ্যের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা। এক দিনের রেডি মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা করে। আবার আবহাওয়াজনিত কারণে রোগ বেড়ে যাওয়ায় ওষুধ কিনতেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। হঠাৎ করে এখন ব্রয়লারের দাম কমে যাওয়ায় তারা ফের লোকসানে পড়তে যাচ্ছেন।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে খামার ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকবে না বলেও জানান তারা।
জেলার গাংনী উপজেলার নিশিপুর গ্রামের খামারি বশির আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিনই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, তাতে মানুষের মাথাব্যথা নেই। আর ব্রয়লার মুরগির দাম যদি এক টাকা বাড়ে তাতে মানুষের মাথাব্যথার শেষ থাকে না।
‘আমরা মেহেরপুরের মুরগি খামারিরা দীর্ঘদিন ধরে লসের মধ্যেই আছি। আমার সাথের কত খামারি আজ খামার বাদ দিয়ে বিভিন্ন পেশায় চলে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েক মাস হবে মুরগিতে দুইটো পয়সা হইয়িছে। সেই লোভে এক সপ্তাহ হবে এক দিনের রেডি মুরগির বাচ্চা ৬৬ টাকা কইরি এক হাজার পিস নিছি। আবার খাবার দামও বস্তায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বাইড়িছে।
‘আজ শুনেছি মুরগির বাজার কইমি গিছে। আমার বোঝা হইগিছে, আমাকে এবার পথে বসতে হবে।’