রাজধানীর ১২টি স্থানে ১ নভেম্বর থেকে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতি হিসেবে গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়ে আজ ডিটেইল আলোচনা হয়েছে কেবিনেটে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, আইসিটিমন্ত্রী এটাতে অংশগ্রহণ করেছেন। সিদ্ধান্ত ছিল ঢাকায় পূর্বাচলে টিকা দেয়া হবে। এতে শিক্ষামন্ত্রী একটু আপত্তি জানান।
‘তিনি (শিক্ষামন্ত্রী) বলেন, পূর্বাচলে যে কমিউনিকেশন, ৪০-৫০ হাজার ছেলে-মেয়েকে নিতে হলে ১ হাজার থেকে ১২ শ বাস লাগবে সেটা সম্ভব না। তারপর রাস্তাও রিকনস্ট্রাকট হচ্ছে। এজন্য ১২টা বিকল্প জায়গা তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রোপোজাল দিয়েছেন। এই ১২ স্থানেই বড় জায়গা আছে, পাশাপাশি এয়ারকন্ডিশনের ব্যবস্থা আছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছেন, সিটি করপোরেশনের যে কমিউনিটি সেন্টারগুলো রয়েছে সবগুলোই এয়ারকন্ডিশনড। এসবেও দেখা যেতে পারে, কিন্তু যেহেতু ১২টা স্থান সিলেক্ট করা হয়েছে এগুলোতে ইমিডিয়েট শুরু করে ফেলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যত বেশি বাড়ানো যায়, ছেলে-মেয়েদের যেন বেশি দূরে নিতে না হয়।’
‘১ নভেম্বর থেকেই টিকাদান শুরু হবে। ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ লাখ নিবন্ধন করে ফেলেছে। তাদেরকে দিয়েই শুরু করতে বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী)। রাজধানী বাদে অন্য জায়গাগুলোতেও শুরু করতে বলা হয়েছে, যেখানে যেখানে সম্ভব।’
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব বলেন, ‘১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের তালিকা তৈরির যে কাজটি সেটি চূড়ান্ত করার পথে। তালিকা আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় দিয়েছে, সেটি আবার আমরা আইসিটি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছি। তারাও আমাদের জানিয়েছে, সুরক্ষা অ্যাপসে তারা নিবন্ধন করে দিয়েছেন। এখন স্কুল থেকে বাকিটা করা হবে।
‘ঢাকায় ১২টি কেন্দ্র আমরা ঠিক করেছি। সেখানেই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। সবই ঠিক আছে। আমাদের অন্য টিকা কার্যক্রমও চলমান থাকবে। স্কুলের ছেলে মেয়েদের টিকার কাজও চলমান থাকবে।’
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘প্রথমে ঢাকায় শুরু করছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কেন্দ্র যেন আরও বাড়ানো হয়। আমরা সেদিকেও নজর দেব যাতে কেন্দ্র আরও বাড়ানো যায়। সারা দেশেই আমরা টিকা দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ২১টি সেন্টার চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রত্যেক জেলায় টিকা দেয়ার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। যেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ নেই সেটির ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করি, সেটিও দ্রুতই হয়ে যাবে। এটা একটু সময় নিবে।
‘আমরা ৪০ হাজার পর্যন্ত রোজ দিতে পারব। টিকা হাতে যা আছে দিতে থাকব। টিকা যথেষ্ট আছে আর আসছেও। স্কুল শিক্ষার্থীদের আমরা ফাইজার টিকা দিচ্ছি। ফাইজার মজুদ আছে। নভেম্বরে আরও ৩৫ লাখ চলে আসবে।’
পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার আওতায় আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব শিক্ষার্থীকে গণটিকা দেয়া শুরুর কথা ছিল ৩০ অক্টোবর।
স্কুলশিক্ষার্থীদের মাঝে এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক করোনা প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জে ১০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়।
বড় পরিসরে স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে।