পার্বত্য জেলাগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জাম্বুরা চাষ। পাহাড়জুড়ে এখন চোখে পড়বে সারি সারি জাম্বুরার বাগান। স্থানীয় হাটবাজারের পাশাপাশি সারা দেশে সরবরাহ হচ্ছে পাহাড়ে উৎপাদিত জাম্বুরা।
স্থানীয়ভাবে ফলটি ‘জাম্বুরা’ বা ‘বাতাবি লেবু’ নামে পরিচিত হলেও চাকমা ভাষায় এর নাম ‘কন্ডাল’। করোনা মহামারিতে দেশব্যাপী জাম্বুরার চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষিবিদরা।
রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকার আনাচকানাচে এই ফল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। অন্যান্য ফলের পাশাপাশি মিশ্র ফল হিসেবে জাম্বুরা চাষ করায় অধিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, রাঙামাটির ১০ উপজেলার মধ্যে সদর, লংগদু, বরকল, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, জরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় জাম্বুরার চাষ বেশি হচ্ছে।
এসব উপজেলা থেকে রাঙামাটি শহরের সমতাঘাট এবং পৌর ট্রাক টার্মিনালের হাটে জাম্বুরা নিয়ে আসেন কৃষকরা। সেখান থেকে পাইকারি দরে জাম্বুরা সংগ্রহ করে সারা দেশে সরবরাহ করেন ব্যবসায়ীরা।
রাঙামাটির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বনরূপা সমতাঘাট বাজারে ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বাজারে আকারভেদে প্রতি হাজার জাম্বুরা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায়। আর খুচরা বাজারে প্রতিটি জাম্বুরা ১০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার বন্দুকভাঙার জাম্বুরা চাষি অনন্ত চাকমা বলেন, ‘ছোট একটা জাম্বুরার বাগান আছে। এ বছরে সবচেয়ে বেশি দামে জাম্বুরা বিক্রি হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় পাইকারি ৮ থেকে ১০ টাকা বিক্রি করতে পেরেছি। এ বছরে জাম্বুরা বিক্রি করে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।’
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, ‘এখানকার আবহাওয়া ও মাটি জাম্বুরা চাষের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় এ বছর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। জেলায় জাম্বুরার আবাদ হয়েছে এক হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ টন।’
তিনি জানান, করোনার কারণে এই ফলের চাহিদা বেড়েছে। সহজ শর্তে কৃষকরা ঋণসহ কৃষি সহায়তা পেলে এবং পাহাড়ে উৎপাদিত ফলমূল সংরক্ষণে হিমাগার স্থাপন করা গেলে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবেন।