মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ফেরি ডুবেছে শুনে ছয় বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ঘাটে ছুটে যান শিমু আক্তার।
কাঁদতে কাঁদতে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের লোকজনকে বর্ণনা দিতে থাকেন তার স্বামী মো. তুহিনের। ডুবে যাওয়া ফেরিতেই ছিলেন তুহিন। ফেরিডুবির পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।
শিমু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার স্বামী তিন বছর আগে বিদেশ থেকে আসছেন। ৫ নম্বর ঘাটে ব্যবসা শুরুর জন্য দোকানও ঠিক করছেন। আমার শ্বশুরবাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকায়। আমরা মানিকগঞ্জের শিবালয়ের ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি।
‘আজকে সকালে আমাকে ফোন দিয়ে রেডি হতে বলেন। উনি আমাকে গোয়ালন্দ নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই ফেরিতে আসছিলেন। ফেরি ডোবার আগে কথা হয়েছে। এটাই শেষ কথা। ফেরি ডোবার পরও কিছুক্ষণ মোবাইল খোলা ছিল। এরপর সব বন্ধ।’
‘আমি আমার স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছি না। আপনারা তার খোঁজ দিতে পারেন?’, বলেই কাঁদতে শুরু করেন শিমু।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান সকালে জানান, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মোটরসাইকেল ও যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে আমানত শাহ নামে একটি বড় রো রো ফেরি নোঙর করছিল। ফেরি থেকে দু-তিনটি যানবাহন নামার পরপরই এটি কাত হয়ে ডুবে যায়।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যায় রো রো ফেরি
পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান জানিয়েছেন, ফেরিটি কাত হয়ে আংশিক ডুবেছে, পুরোপুরি ডুবে যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাভার্ড ভ্যানচালক বলেন, ‘ফেরি কাত হওয়া দেখে সবাই দ্রুত বেরিয়ে আসেন। আমিও বেরিয়ে পড়ি। ফেরিতে কেউ আটকে থাকতে পারে।’
তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।
তুহিনের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দিনো শর্মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নদীতে পড়ে যাওয়া যানবাহনগুলো উদ্ধারে আমাদের কাজ চলছে। এখনও হতাহত কাউকে পাইনি। কেউ যদি ওই ফেরিতে থাকা কোনো স্বজন নিখোঁজ থাকার অভিযোগ করে, তাহলে আমরা বিষয়টি মাথায় রাখব।’