ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, সাম্প্রদায়িক রঙ লাগিয়ে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপে ফেলতেই কুমিল্লার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশের চলমান সংকট উত্তরণে করণীয় নির্ধারণে ওলামা মাশায়েখ ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কুমিল্লার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক হামলার প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, ‘একথা স্পষ্ট যে, এ সকল ঘটনায় ধর্মভিত্তিক কোনো দল, সংগঠন বা ধর্মপ্রাণ নাগিরক জড়িত নয়। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যে পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছে।’
দেশ বিরোধী চক্রান্ত মোকাবেলা ও চলমান সঙ্কট উত্তরণে আগামী ১৭ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় সেমিনার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি শ্রেণি বিক্ষোভ করে সংবিধান, ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে। ওই শ্রেণিটি সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দেয়ার স্লোগান দিচ্ছে। তাদের স্লোগানের সঙ্গে ভারতের উগ্রবাদী সংগঠন বিজিপি’র স্লোগানের মিল রয়েছে।’
তিনি বলেন, কথিত কিছু বুদ্ধিজীবী দেশে কোন সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটলেই আলেম ওলামা ও ইসলামী সংগঠনগুলোকে একতরফা দায়ী করে ৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার নামে এদেশে ইসলামপন্থীদের সকল তৎপরতা বন্ধের দাবি তুলছে। ইসলামপন্থিদের ঘায়েল করতে পরিকিল্পিতভাবে এগুলো করা হচ্ছে।’
চরমোনাই পীর বলেন, ‘ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশ ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশে বসেও একটি শ্রেণি তাল মিলাচ্ছে। এদেশের সংখ্যালঘুরা রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা মুসলমানদের চেয়ে বেশি ভোগ করছে, যা বিশ্বে বিরল। সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে কেউ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী ষড়যন্ত্র সাজিয়েছে কি-না, তা আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে।’
তিনি সংকট নিরসনে দলমত নির্বিশেষে সব দেশপ্রেমিক শক্তির জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারি সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতী মুহিব্বুল্লাহিল বাকি নদভীসহ আলেম-ওলামারা।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর কালো মেঘের ঘনঘটা শুরু হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনা একটি ষড়যন্ত্র। ইসলাম ও মুসলমানদের ধ্বংসের চক্রান্তস্বরূপ এটা করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আলেম-ওলামা, ইসলামী সংগঠনের কেউ জড়িত প্রমাণ করতে পারেনি। বিজেপি নেতারা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে সৈন্য পাঠাতে বলা প্রমাণ করে ষড়যন্ত্র কতটুকু গড়িয়েছে।’