সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আব্দুল বাসেত মজুমদারের মৃত্যুতে বেশি শোকাহত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারের মৃত্যুর খবর শুনে বুধবার নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আজ আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক একটি দিন। আমি আমার একজন অকৃত্রিম বন্ধু, বড় ভাই, একজন অভিভাবককে হারিয়েছি।’
বাসেতের সঙ্গে ৩৩ বছর ধরে একসঙ্গে আইন অঙ্গনে কাজ করার স্মৃতি চারণ করে জয়নুল। তিনি বলেন, ‘তিনি ২৪৩ নম্বর রুমে বসতেন আর আমি ২৪৪ রুমে বসতাম। দুই জনের পাশাপাশি রুম ছিল। দীর্ঘ দিন আমরা একসঙ্গে কাটিয়েছি। একসঙ্গে প্র্যাকটিস করেছি। বিদেশে গিয়েছি। ১৯৮৮ সালে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। সেই থেকে দুজনের একসঙ্গে চলা।’
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িত। দীর্ঘ দিন আমরা একসঙ্গে প্র্যাকটিস করেছি। তার সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক বেশি ছিল। যে কারণে মৃত্যুর কয়েক দিন আগেও হাসপাতালে থাকা অবস্থায় আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন। আমি হাসপাতালে গেলে আমাকে দেখে তিনি খুশি হয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে একসঙ্গে মোনাজাত করি।’
জয়নুল বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন, কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় তিনি চলে গেলেন। আমরা তার শোক সন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাই। তিনি গরিবের আইনজীবী হিসেবে খ্যাত। আইনজীবী সমিতির তিনি সভাপতি ছিলেন। বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
‘১৯৯১ সালে আমরা একসঙ্গে ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেমিনার করতে গিয়েছি। দুইজনের রাজনৈতিক আদর্শ ভিন্ন হলেও দুইজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ। তার সঙ্গে আমার ছোট ভাই-বড় ভাই সম্পর্ক। রাজনৈতিক পরিচয় ভিন্ন হলেও আমাদের মধ্যে ছিল সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক।’
বাসেতের মৃত্যুতে আইন অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হলো বলে উল্লেখ করেন তার বন্ধু জয়নুল।
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে বুধবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে মৃত্যু হয় বাসেত মজুমদারের। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
জীবদ্দশায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অসহায় গরিবদের মামলা করে ‘গরিবের আইনজীবী’ হিসেবে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।
বাসেত মজুমদারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক জানিয়েছে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আরও অনেকে।