মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে নোঙর করার সময় অতিরিক্ত লোড থাকায় বাম পাশে কাত হয়ে ডুবে যায় শাহ আমানত ফেরিটি। এর আগে নিচের অংশের ব্যালাস্ট ট্যাংক লিক হয়ে পানি ঢুকে যায় ফেরিতে।
ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দিনোমনি শর্মা এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে ফেরির নিচের অংশে ব্যালেন্সের ট্যাংক লিকেজ হয়ে অতিরিক্ত পানি ঢোকার কারণে ফেরিটা এক পাশে কাত হয়ে আংশিক ডুবে গেছে। আমরা উদ্ধারকাজ অব্যাহত রেখেছি। এখনও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
‘লোড বেশি ছিল, তাই কাত হয়ে এক পাশে এটি হেলে যায়। এতে ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, তিনটি ট্রাক ও সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল ছিল। কেউ নিখোঁজ আছে কি না এখনও নিশ্চিত না। প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানিয়েছেন অনেকেই লাফিয়ে নেমে গেছেন।’
ব্যালাস্ট ট্যাংক কী জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ফেরির নিচের অংশে ফেরির ভারসাম্য রক্ষার জন্য কিছু চেম্বার থাকে। এগুলোকে ব্যালাস্ট ট্যাংক বলে। আমরা ধারণা করছি পানি প্রবেশ করে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে ফেরি কাত হয়েছে। তবে এখনও ডিটারমাইন্ড না।’
এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের টার্মিনাল সুপার অ্যাটেনডেন্ট মো. শামসুদ্দিন জানান, ফেরিতে স্বাভাবিক যানবাহনই ছিল, অতিরিক্ত যানবাহন নেয়া হয়নি।
পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে বুধবার সকালে রো রো ফেরিটি কাত হয়ে হেলে পড়ে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান সকালে জানান, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন লোড করে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটে ফেরিটি নোঙর করে। ফেরি থেকে দু-তিনটি যানবাহন নামার পরপরই এটি কাত হয়ে ডুবে যায়।
পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান জানিয়েছেন, ফেরিটি কাত হয়ে হেলে পড়েছে, ডুবে যায়নি।
এই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি খুলনা থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। তিনি যেই ফেরিতে ছিলেন, সেটি থেকে কিছু দূরে ছিল শাহ আমানত ফেরিটি। মাঝনদীতে পৌঁছালে পদ্মার স্রোত বেড়ে যায়। সে সময় তিনি দেখেন পেছনের ওই ফেরিটিতে পানি উঠছে। ঘাটের কাছাকাছি পৌঁছাতেই কাত হয়ে পানিতে আংশিক তলিয়ে যায়।
দৌলতদিয়া ঘাটের নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সৈয়দ জাকির হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ফেরির ডুবে যাওয়া অংশে এখনও কাউকে আটকে থাকা অবস্থায় পায়নি। ফেরিতে কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল না। তবে তিনটি মোটরসাইকেল ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। সেগুলোর চালক ঘাটে অবস্থান করছেন।