বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জনশুমারির জন্য ৪ লাখ ট্যাব

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:৫৯

জনশুমারি পরিচালনার জন্য ৪ লাখ ট্যাব কেনার প্রস্তাব প্রথম দফায় ফিরিয়ে দেয়ায় বুধবার আবার তা ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উঠছে। এবার অনুমোদন পেলে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জনসংখ্যার গণনা শুরু হবে।

বছরের শুরুতে জনশুমারি হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এরপর ডিজিটাল এ শুমারির জন্য ৪ লাখ ট্যাব কেনার প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উঠলে কমিটি ত্রুটির কারণে তা ফেরত পাঠায়। ফলে আরেক দফা পেছায় জনশুমারি।

নতুন করে আবারও ট্যাব কেনার প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে উঠছে আজ বুধবার। অনুমোদন পেলে কাটবে শুমারি শুরুর জটিলতা।

জনশুমার পরিচালনকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, ডিজিটাল এ শুমারি শুরু নির্ভর করছে ট্যাব হাতে পাওয়ার পর। তবে, এরই মধ্যে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুমারি চালানোর প্রস্তাব অনুমোদনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে পাঠিয়েছি। একই সঙ্গে জনশুমারির সম্ভাব্য তারিখ ধরে তা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠিয়েছি। তিনি অনুমোদন দিলেই শুমারি শুরু হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে ট্যাব হাতে পাওয়ার ওপর। কারণ এবারের শুমারিতে ডিজিটালি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও তা সংরক্ষণ করা হবে।

বিবিএস জানিয়েছে, চলতি বছরের মধ্যেই শুমারি শুরুর আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ জন্য প্রথমে গত ২ থেকে ৮ জানুয়ারি জনশুমারি করার কথা ছিল, যা করোনার কারণে পিছিয়ে যায়। পরে তা চলতি মাসের ২৫ থেকে ৩১ অক্টোবর করার সিদ্ধান্ত হয়। এ শুমারির অন্যতম উপাদান ট্যাব (ট্যাবলেট পিসি) কিনতে বিলম্ব হওয়ায় তা শুরু করা যায়নি। ট্যাব কেনার প্রস্তাব অনুমোদন ও প্রধানমন্ত্রীর সায় পেলে ২৪ থেকে ৩০ ডিসেম্বর শুমারি সপ্তাহ ধরে জনগণনা করা হবে।

আগে জনশুমারির নাম ছিল আদমশুমারি। ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী ‘আদমশুমারি ও গৃহগণনা’র নাম পরিবর্তন করে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা’ করা হয়।

দেশের ষষ্ঠ এ শুমারির পুরো প্রক্রিয়াটি হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। এ জন্য ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব সংগ্রহ করা হবে।

এ ট্যাব কেনার বিষয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে। মাঠপর্যায়ে জনশুমারির তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রকল্পটির আওতায় ট্যাবলেট কেনার জন্য উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে দুটি দরপত্র জমা পড়ে। তবে দরপত্র প্রক্রিয়া ত্রুটির কথা বলে প্রস্তাবটি ফেরত দেয়া হয়।

বিবিএস বলছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি জনশুমারির মাঠপর্যায়ের গণনাকারীদের ট্রেনিং দেয়া হবে। এ ছাড়া এবারই প্রথম বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি (প্রবাসী) এবং প্রবাসফেরত বাংলাদেশিদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

ট্যাব দিয়ে ডিজিটালি জনশুমারি করায় শুমারির এক মাসের মধ্যেই প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাবে। আর ৬৪ জেলার তথ্য ক্রস ম্যাচিং করতে ৬ মাসের মতো সময় লাগবে। এর আগে ফলাফল দিতে অনেক বেশি সময় লাগত। শুমারিতে ব্যবহৃত ট্যাব ৬ থেকে ৮ বছর ব্যবহার করা যাবে। এই ট্যাব বিবিএসের অন্য প্রকল্পগুলোয় ব্যবহার করা হবে। ২০২৩ সালে যখন অর্থনৈতিক শুমারি হবে, সেখানে এই ট্যাব ব্যবহার করা হবে।

শুমারির মাধ্যমে দেশের খানার সংখ্যা, খানায় বসবাসকারী সদস্যদের সংখ্যা, আর্থ-সামাজিক ও জনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করা হবে। এসব তথ্য দেশের সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতিনির্ধারণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জনশুমারির ব্যয়

আইন অনুযায়ী প্রতি ১০ বছর পরপর দেশের প্রতিটি মানুষকে গণনার আওতায় আনা হয়। এ জন্য ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১’ শীর্ষক প্রকল্প ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায়। শুরুতে এটির মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৮৩ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। পরে প্রকল্পের সংশোধনীতে ব্যয় কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা।

এবারের জনশুমারি ও গৃহগণনা চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ধাপে শুমারির ব্লক এলাকা প্রণয়ন করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে দেশের সব খানা (পরিবার), ব্যক্তি এবং আবাসন ইউনিট গণনা করা হবে। তৃতীয় ধাপে শুমারি-পরবর্তী জরিপ পরিচালনা করে শুমারির গুণগত মান পরিমাপ করা হবে। চতুর্থ ধাপে আর্থ-সামাজিক ও জনমিতিক জরিপ পরিচালনা করে খানা ও জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনশুমারি হয় ১৯৭৪ সালে। পরবর্তী সময়ে ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর