বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারীর মর্যাদা রক্ষায় সংশোধন হচ্ছে সাক্ষ্য আইন

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০১:০৪

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। ধারাটি নারীর মানবাধিকারের বিরুদ্ধে। আইন থেকে ধারাটি বাতিল হলে তা নারীর মর্যাদাহানি রোধ করবে।’

নারীর মর্যাদা রক্ষায় দেড় শ বছরের পুরনো সাক্ষ্য আইন সংশোধন হচ্ছে। আর ফৌজদারী কার্যবিধি বাংলা ভাষায় করা হলেও সাক্ষ্য আইন ইংরেজিতেই থাকবে।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মঙ্গলবার এক মতবিনিময় সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা জানান।

সাক্ষ্য আইনকে যুগোপযোগী করতে এ সভার আয়োজন করা হয় ।

সেখানে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘১৫৫(৪) ধারা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। ধারাটি নারীর মানবাধিকারের বিরুদ্ধে। আইন থেকে ধারাটি বাতিল হলে তা নারীর মর্যাদাহানি রোধ হবে।’

১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যখন বলাৎকার বা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে ফৌজদারিতে সোপর্দ হন, তখন দেখানো যেতে পারে যে অভিযোগকারিণী সাধারণভাবে দুশ্চরিত্রা।

আইনজীবীরা জানান, আইনে এ ধারার ফলে ধর্ষণের শিকার নারীকে বিচারের সময় দুশ্চরিত্র প্রমাণের জন্য অশ্লীল ও অবান্তর প্রশ্ন করা হয়। যা নারীর জন্য দ্বিতীয়বার ধর্ষণের শিকার হওয়ার সমতুল্য।

মতবিনিময় সভায় আইনমন্ত্রী বিভিন্ন ধারা সংশোধন ও নতুন ধারা সন্নিবেশ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ‘সাক্ষ্য আইনটি এখনও কার্যকরভাবে প্রাসঙ্গিক। তবে ডিজিটালাইজেশন একটি নতুন বাস্তবতা। এই বাস্তবতায় সাক্ষ্য আইন সংশোধনের প্রয়োজন আছে। এমন সংশোধনী আনতে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হয়েছি। আইন-আদালত এর বাইরে নয়। তাই বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা সাক্ষ্য আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছি। সাক্ষ্য আইনে ন্যায় বিচার নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সব বিধান আছে। বাস্তবতা ও সময়ের চাহিদার কারণে সে আইনে কিছু নতুন বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘লকডাউনের সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিচারিক কার্যক্রম চলমান রাখা হয়। বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও সংশোধনের কাজ করা হচ্ছে সময়ের প্রয়োজনেই।’

সাক্ষ্য আইন বিষয়ে আলোচনা সভায় অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: সংগৃহীত

ফৌজদারী কার্যবিধি বাংলা ভাষায় করা হলেও সাক্ষ্য আইন ইংরেজিতে হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন আইন প্রনয়ণের পর তা আদালতের রায়ের মাধ্যমে ব্যাখ্যা হয়ে নজির আকারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাক্ষ্য আইনসহ বেশকিছু আইন বাংলায় নতুন করে প্রনয়ণ করা হলে আদালতের দেয়া রায়ে ব্যবহৃত অনেক শব্দ আবার ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবে। সে কারণে সাক্ষ্য আইন ইংরেজিতে থাকা সমীচীন হবে।’

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক কো-অর্ডিনেটর মিয়া সেপো বলেন, ‘সাক্ষ্য আইন সংশোধনের বিষয়টি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ সংশোধনী মানবাধিকার উন্নয়নে সহায়ক হবে। সাক্ষ্য আইনের ধারা সংশোধন হলে নারীর মর্যাদাহানির পুনরাবৃত্তি হবে না। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ায় এ সংশোধনী যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে জাতিসংঘ সর্বাত্মক সহায়তা করবে।’

আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।

আলোচনায় অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সাওয়ার, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (সিআইডি) ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল্লাহ আবু।

এ বিভাগের আরো খবর