রংপুরের পীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সবসময় বিরূপ প্রচারণা হতে দেখা যায়। দুর্নীতি খোঁজার নামে বা কোনো কিছুর গন্ধ পাওয়া যায় কি না, সেভাবেও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের চেষ্টা করা হয়। এটি পরিষ্কার যে, পীরগঞ্জের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ছাত্রলীগকে দোষারোপের সুযোগ নেই।’
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়ার ঘটনার পর সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে ফেসবুকে কমেন্টের জেরে রংপুরের পীরগঞ্জে বড়করিমপুরে হিন্দু পল্লীতে লুটপাট, ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার অনেকের মধ্যে সৈকত মন্ডল কারমাইকেল কলেজে দর্শন বিভাগ ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলেন।
সৈকতকে অনেক আগেই ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের অপরাধে গ্রেপ্তারদের মধ্যে সৈকত মন্ডল, যাকে নানা অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ থেকে অনেক আগে বের করে দেয়া হয়েছে, তাকে কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য বলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।’
রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের একটি বিবৃতির প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিবৃতিতে তারা বলেছে, সে একজন অনুপ্রবেশকারী ছিল এবং কোনো না কোনোভাবে একটা বিভাগের একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ের কমিটিতে তার নাম ছিল। পরে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যাকে আগেই ছাত্রলীগ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, সে যখন কোনো অপকর্ম করে, তখন সে দায় কখনও ছাত্রলীগের ওপর দেয়া যায় না।’
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য বিএনপি-জামাতকে দায়ী করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করার কারণে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে পূজামণ্ডপে যে কোরআন শরীফ রেখে এসেছিল, সে কারও ফরমায়েশে এ অপকর্ম করেছে।
‘এ ঘটনার পর ভিডিও করা হয়েছে এবং সেটি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নানা ধরণের পোস্ট দেয়া হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশে শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট করা হয়েছে। কারা এর পেছনে আছে সহসাই বের হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি খুবই স্পষ্ট যে কারা সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে। সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে বিএনপি-জামাত এবং ধর্মান্ধ উগ্রগোষ্ঠী। অপরাধীদের যারা প্ররোচনা দিয়েছে, তারা আমাদের পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করেছে। এরা হিন্দু ধর্মকেও অবমাননা করেছে, একইসঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এদেরকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’