দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলার ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে দেশ ত্যাগ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য।
মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ দেশ আমাদের সকল বাধাবিপত্তি প্রতিহত করেই আমরা এ দেশে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকব।’
প্রতিমন্ত্রী স্বপন বলেন, ‘উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের অত্যাচার করছে যেন তারা ভীত হয়ে দেশ ত্যাগ করে। আমরা আজ দৃঢ় কণ্ঠে বলছি, কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, কোনো হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান তারা নিজের দেশ ছেড়ে কখনই যাবে না।’
হামলাকারীদের বিষয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে আছে জানিয়ে দ্রুত বিচার আইনের আওতায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদও জানান প্রতিমন্ত্রী।
বলেন, সাম্প্রতিক হামলায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণে প্রধানমন্ত্রী তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবেন।
সভায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দেবালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও হতাহতদের পনর্বাসন বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভা শেষে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘মৌলবাদীদের দ্বারা সংগঠিত পরিকল্পিত এই সহিংসতায় হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিদের মনোবল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথমে তাদের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
‘এজন্য স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ও নেতৃবৃন্দকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি এবং হতাহতদের তালিকা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হবে।’
তৃণমূল পর্যায়ে প্রশাসন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে সাম্প্রতিক সম্প্রীতি বিষয়ে দ্রুত আলোচনা সভার আয়োজন এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সিদ্ধান্তও নেয়া হয় সভায়।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, সে যদি আমার দলেরও হয়, আমি মনে করি মানুষ হিসেবে তার রূপ না, তার রূপ হলো পশু সমতুল্য।
‘পশু সমতুল্য যারা এসব কর্ম করেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবার ঐক্যমত গ্রহণ করতে হবে এবং আগামী দিনে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শান্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা অপকর্ম করেছে, তাদের শাস্তি এমনই হওয়া উচিত তাদের শাস্তি দেখে পরবর্তীকে কেউ যাতে এমন কাজ করার সাহস না পায়।’
কাউকে আর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, হাঙ্গামা করার সুযোগ দেয়া হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দল ও প্রশাসন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে কেউ এ ধরনের কাজ করতে পারবে না।’
সভায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীরেন সিকদার, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপাল, পঙ্কজ দেবনাথও উপস্থিত ছিলেন।