দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে, তার পরিকল্পনা লন্ডনে বসে করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক হামলা দেশের শান্তি নষ্ট করার জন্যই ঘটানো হয়েছে। এর পরিকল্পনা হয়েছে লন্ডনে বসে। আপনারা দেখেছেন না, বিএনপি প্রায় এক মাস ধরে বৈঠক করছে? প্রকাশ্যে বৈঠক করেছে আর গোপনে ষড়যন্ত্র করেছে।
‘সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হচ্ছে এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে দুর্গাপূজার সময় পূজামণ্ডপে হামলা করা, আমাদের পবিত্র কোরআন শরিফ পূজামণ্ডপে রেখে আসা।’
রাজশাহী সার্কিট হাউসে মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দুর্গাপূজায় সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা।
নানুয়ার দিঘির পাড়ের ওই মণ্ডপে চলে ব্যাপক ভাঙচুর, আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশকিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনি। কাজটা তারা করে, তারপর টেলিভিশনের সামনে গিয়ে বড় বড় কথা বলে।’
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে বিএনপি-জামায়াত, ধর্মান্ধ-উগ্রবাদীরা। দেশের কোনো সম্প্রদায়ের লোক একে অপরের ধর্মগ্রন্থ অবমাননা করার মানসিকতা পোষণ করে না।
‘সরকার দেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ঘটনার পর ১০২টি মামলা করেছে, সাত শ’র মতো দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। কঠোর হস্তে সরকার এটি দমন করেছে। সরকারের এই ভূমিকা আন্তর্জাাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে টেলিভিশনের ক্লিনফিড নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে ১৭ বছর পর ক্লিনফিড কার্যকর হয়েছে। এটি সহজ কাজ ছিল না। আমাদের দেশের আকাশ অবশ্যই উন্মুক্ত। দেশের আইন মেনেই উন্মুক্ত আকাশের সুবিধা নিতে হবে। ক্লিনফিড কার্যকর করায় দেশের গণমাধ্যম উপকৃত হচ্ছে।
‘এর সুফল আপনারা কিছুদিন পরেই দেখতে পাবেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রতি বছর এই খাতে দুই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে এটি করা হয়েছে। এখান থেকে সরকারও ভ্যাট হিসেবে ৫০০ কোটি টাকা পাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
এর আগে সকালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাজশাহী উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। আগামী নির্বাচনের আগে এই কেন্দ্র চালু করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।